স্থগিত হওয়ার আশঙ্কায় হজ

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ক্রমশ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার হজে আগ্রহীদের এখনই হজের পরিকল্পনা না করার পরামর্শ দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরের হজ স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই সৌদি সরকার তাদের গ্র্যান্ড ফতোয়াবোর্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন ফতোয়াবোর্ড ও ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছে বলে জানা গেছে। মহামারী, সঙ্ঘাত ও যুদ্ধ বিগ্রহের কারণে হজ স্থগিত রাখা কিংবা সীমিত আকারে পালনের নজির রয়েছে।

ইসলামী বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে হজ স্থগিত রাখা যেতে পারে। প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মুসলমান হজ পালন করার জন্য সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে যান।

সূত্র জানায়, হজের আগে সৌদি আরবের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও বিশ্ব পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হলে সীমিত আকারে অভ্যন্তরীণভাবে হজ কার্যক্রম চালু রাখা হতে পারে। তবে নিজ দেশে করোনা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায় ওমরাহর পাশাপাশি এ বছরের হজ কার্যক্রম না করার পরামর্শ দিয়েছে।

বাংলাদেশের এজেন্সি মালিকরা হজের নিবন্ধন চালু রাখায় দোটানায় পড়েছেন। দুই দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর পরও নিবন্ধনে সাড়া নেই। আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধের সময় রয়েছে। ছুটি ও লকডাউনের মধ্যেও নিবন্ধন চালু রাখা হয়েছে।

সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা থাকায় এবং নিবন্ধন কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে হওয়ার কারণে অফিস বা বাসায় বসেও নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। তবে গত কয়েকদিনে মাত্র দেড় হাজারের মতো নিবন্ধন হয়েছে। হজে যেতে না পারলে পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ঘোষণা দিলেও হজ গমনেচ্ছুদের মধ্যে সংশয় দূর হচ্ছে না। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে দেওয়া এক চিঠিতে পরবর্তী ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত হজের অত্যাবশ্যকীয় সকল কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই চিঠি পাওয়ার পরও ধর্ম মন্ত্রণালয় হজের নিবন্ধন সার্ভার চালু রেখে কার্যক্রম ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব সার্ভারে হচ্ছে।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আসলে নিশ্চিত করেতো কিছুই বলা যাচ্ছে না। নিবন্ধনের সিস্টেম খোলা রাখা আছে। আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছি। হজ স্থগিত হলে হজযাত্রীরা চাইলে এজেন্সির মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নিতে পারবেন অথবা তার পরের বছরের হজের জন্য নিবন্ধিত হয়ে থাকতে পারবেন।

এদিকে গত সোমবার থেকে সৌদি আরব জুড়ে কারফিউ জারি করেছেন বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ। আপাতত আগামী ২১ দিন চলবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ চলবে বলে আরব নিউজ জানায়।

ওয়ার্ল্ডওমিটার জানায়, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সৌদি আরবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭২০ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ জন। গতকাল নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি মাসের প্রথমদিকে ওমরাহ পালন স্থগিত ঘোষণা করে সৌদি আরব। সাধারণত বিশ্বের ৩০ লাখ মানুষ হজ পালন করতে প্রতিবছর পবিত্র মক্কায় যান। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই ৯ জিলহজ হজের দিন। বাংলাদেশ থেকে আগামী ২৩ জুন হজ ফ্লাইট চালুর কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ বিমান।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। গতকাল পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলে নিবন্ধন হয়েছে ৪৪ হাজারের মতো।

Scroll to Top