ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গেল প্রায় ২ হাজারের কাছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে ২২ শতাংশ হারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ এবং এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সহ উপমহাদেশে এই সময়ের মধ্যে করোনার সংক্রমণ কয়েকগুণ বাড়ার সম্ভাবনা। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার প্রায় ২২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আগামী সপ্তাহে এই হার আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। যদিও এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভারত স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছয়নি। অর্থাৎ, কমিউনিটি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে এখনও ছড়িয়ে পড়েনি সংক্রমণ। কিন্তু অনেকেরই ধারণা, গত দুই দিন ধরে যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সংক্রমণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বা তার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। লকডাউন সত্ত্বেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তারা চিন্তিত।
সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৪৩৭ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১,৯৯৮ জন। এর মধ্যে ১৪৮ জন সম্পূর্ণ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদিকে, ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যদিও দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের সঙ্গে বেসরকারি তথ্যের বেশ কিছুটা পার্থক্য দেখা দিয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে ইতোমধ্যে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০২।
এছাড়া কেরালা (২৪১ জন), তামিলনাড়ু (২৩৪ জন), দিল্লি (১৫২), উত্তরপ্রদেশ (১০৩ জন) এবং কর্নাটক (১০১ জন)-সহ ২৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বর্তমানে এই মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে একটা বড় অংশ দিল্লির নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সমাবেশ যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, করোনায় মৃত্যুতে রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র শীর্ষে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে মারা গেছেন ৬ জন। এছাড়া কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাব, তেলেঙ্গানা এবং পশ্চিমবঙ্গে ৩ জনের মৃত্যু। উত্তরপ্রদেশ, কেরালা, জম্মু-কাশ্মীর এবং দিল্লিতে ২ জন করে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। বিহার, হিমাচলপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে মারা গেছেন একজন করে করোনা রোগী।
একমাত্র উত্তর পূর্ব ভারত ছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি কোণেই সংক্রমণছড়িয়ে পড়েছে। সেটাই চিন্তার কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের দাবি, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে। ১৩০ কোটির দেশে এক হাজারের কাছাকাছি লোকের করোনায় আক্রান্ত হওয়াটা খুব বড় বিষয় নয়। লকডাউনের ফলেই করোনা কম ছড়িয়েছে।