করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় \’অ্যাভিগান\’ নামক একটি ওষুধকে স্থায়ী অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে জাপান। ফ্লু জাতীয় রোগের চিকিৎসায় জাপানে ব্যবহৃত এ ওষুধটি ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধেও কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর আগে এ ওষুধটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করে দারুণ ফলাফল পাওয়া যায়। এ ওষুধটি জাপানে ফ্যাভিপিরাভির নামে পরিচিত। নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ-এর খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে চীন সরকার মঙ্গলবার জানিয়েছে, জাপানি কোম্পানি ফুজিফিল্ম হোল্ডিংস গ্রুপের তৈরি করা একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ওষুধ নতুন করোনভাইরাস বিরুদ্ধে কার্যকর। বেইজিং ইতোমধ্যে ফুজিফিল্ম তোয়ামা কেমিক্যালের তৈরি ফাভিপিরাভির নামের ওই ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে এবং অ্যাভিগান নাম দিয়ে বিক্রি করছে।
চীনের বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় বায়োটেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক কেন্দ্রের পরিচালক ঝাং জিনমিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এটা খুব নিরাপদ এবং স্পষ্টভাবে কার্যকর।
উহান এবং শেনজেনের হাসপাতালে ২০০ রোগীদের ওপর এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়েছিল। ফলাফলে দেখা যায়, যাদের ওই ওষুধ দেয়া হয়েছিল তারা অন্যদের তুলনায় দ্রুত ভাইরাসমুক্ত হয়েছে; আর নিউমোনিয়া লক্ষণগুলোও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল।
ঝাং বলেন, ফাভিপিরাভির নেয়া রোগীরা চারদিনে ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন যেখানে কন্ট্রোল গ্রুপের রোগী ভাইরাসমুক্ত হন ১১ দিনে। ওই ওষুধের সুস্পষ্ট কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছিল না বলেও জানান তিনি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, তার সরকার ফ্লু চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যাভিগ্যান ওষুধকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের দ্রুত অনুমতি দিতে চেষ্টা চালাবে। রাজধানী টোকিওতে এক দিনে ৬৩ জন নতুন রোগীর সন্ধান পাওয়ার পর তিনি বলেন, “আমরা ধসে পড়ার দ্বারপ্রান্তে।”
তিনি বলেন, কভিড-১৯ যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া বা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ভারাক্রান্ত করে ফেলার আগেই দীর্ঘমেয়াদী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে জাপানকে।
বিভিন্ন অর্থনৈতিক উদ্দীপনা ঘোষণা করার পাশাপাশি তিনি বলেন, ফ্লুর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত জাপানি ওষুধ অ্যাভিগ্যান যেন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়, সেজন্য অনুমোদন লাভের জন্য সরকার এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করবে। জাপানি প্রতিষ্ঠান ফুজিফিল্ম হোল্ডিংস এই ওষুধ প্রস্তুত করে থাকে।
উল্লেখ্য করোনাভাইরাসে বিশ্বে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ২১ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের। চীনের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস।