বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে এসেছেন এবং তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, তারা সকলেই ভারতের প্রকৃত নাগরিক। গত মঙ্গলবার (৩ মার্চ) উত্তরদিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে এক জনসভা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি এই মন্তব্য করেছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমের একাংশে সেই খবর প্রকাশিত হয়।
আর এরপরই মমতাকে তোপ দেগেছেন আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মমতাকে বাংলাদেশে গিয়ে প্রচারণার পরামর্শ দিয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব। মমতার ওই বক্তব্যের পরই গতকাল বুধবার (৪ মার্চ) সংবাদমাধ্যমকে হিমন্ত বলেন ‘মমতার ওই বক্তব্যেই পরিস্কার যে তিনি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।’
হিমন্ত আরও জানান ‘ভারতের সংবিধানে নাগরিকত্বের ধারাটি নতুন করে মমতা সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, পরের বার তিনি পশ্চিমবঙ্গে প্রচারনা করবেন না, তিনি বাংলাদেশে গিয়ে প্রচারণা করবেন। তিনি হয়তো বলবেন দয়া করে আসুন এবং আমাকে বারবার নির্বাচন করুন।’
তিনি আরও বলেন ‘বাংলার সীমিত সম্পদ নিয়ে মমতার একটুও উদ্বেগ নেই। পশ্চিমবঙ্গে যে সীমিত পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, রাজ্য সরকারের উচিত বাংলার গরিব ও অভাবী মানুষের কাজে লাগানো। কিন্তু তার বদলে তিনি (মমতা) প্রকাশ্যেই বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের একাংশকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।’
যদিও আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা সিনিয়র কংগ্রেস নেতা তরুন গগৈর অভিমত, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে মমতা তার নিজের রাজ্যকে ভালই চেনেন। ভোটাররা ভারতীয় নাগরিক এবং নির্বাচন কমিশনও তাদেরকে ভারতীয় নাগরিক হিসাবেই গণ্য করে। আর সেই কারণেই ভোটার তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত আছে। তারা প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক।
তরুণের অভিমত, কোন অবৈধ বাংলাদেশি ভোটার কার্ড পেয়ে যায়, তবে নির্বাচন কমিশন এর জন্য দায়ী থাকবে। কারণ তারাই ভোটার কার্ড ইস্যু করে থাকে। তাই নির্বাচন কমিশনকেই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে বিতর্ক ওঠার পরই গতকাল বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুরে এক জনসভা থেকে একশ্রেণীর গণমাধ্যমকে নিশানা করে তার ভাষণ বিকৃত করার অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন ‘আমি কয়েকজনকে দেখছি মিথ্যা ভাবে আমার বক্তব্যকে বিকৃত করছেন। আমি একবারও বলিনি যে যারা বাংলাদেশে আছেন তারা সবাই আমাদের দেশের নাগরিক।
বাংলাদেশে যারা আছেন তারা বাংলাদেশের নাগরিক। ভারতে যারা আছেন তারা এ দেশের নাগরিক। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান একত্রিত ছিল। দেশ ভাগের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে অনেক মানুষ ভারতে চলে আসেন। আমি তাদের কথা বলেছি।