না ফেরার দেশ ধর্ষকের আগুনে দগ্ধ আরেক তরুণীর

উত্তর প্রদেশ রাজ্যের উন্নাও। সেখানে ধর্ষণের শিকার নারীকে পাঁচজন পুরুষ পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে প্রাণিচিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যায় সন্দেহভাজন চারজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আনন্দে মেতেছেন হায়দরাবাদের মানুষ। মারা গেলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ের সেই ধর্ষণের শিকার সেই তরুণীও। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দিল্লির সফদরজং হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান শলভ কুমার জানান, ওই তরুণী ১১টা ১০মিনিটের দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে বাঁচানোর নানা চেষ্টা করা হলেও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেননি। ১১টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার এই মেয়েটিকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছিল তার দুই ধর্ষকসহ পাঁচ দুষ্কৃতি। সে দিন উন্নাও দেখেছিল, জ্বলন্ত অবস্থায় এক তরুণী রাস্তা দিয়ে আর্তচিৎকার করতে করতে যাচ্ছেন। সেই অবস্থাতেই তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন।

আর শুক্রবার সকালে ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের বিছানা থেকে দেওয়া তার জবানবন্দির কথা জানতে পারে বিশ্ব।

ধর্ষিতা তরুণী পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বলেন, রায়বেরিলির আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে তাকে রেল স্টেশনের কাছে ঘিরে ধরে প্রথমে বেত দিয়ে পেটায় পাঁচজন। তার পর তার গলায় বসানো হয় ছুরির কোপ। তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে গেলে তার গায়ে পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

তরুণী তাঁ বয়ানে জানিয়েছেন, আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার জন্য তিনি ভোর ৪টায় তার গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন স্টেশনে। পথে ওঁৎপেতেছিল পাঁচজন। এদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি।

উন্নাওয়ের শুক্লাগঞ্জের বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, অন্যতম অভিযুক্তের এক চাচা তাকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, তার ভাতিজাকে গ্রেফতারের প্রতিশোধে ধর্ষিতার পরিবারের বাড়ি-দোকান সব জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত শিবমের সঙ্গে একটা সময় সম্পর্ক ছিল তরুণীর। পুলিশের কাছে দায়ের করা এফআইআরে ধর্ষিতা জানিয়েছেন, প্রথমে তার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল শিবম। সেই সময়েই শিবম তাকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, তার ভিডিও ধারণ করে। তরুণী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে তাকে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। সেই ভিডিও সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়াও হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ভয়ে গত বছরের শেষের দিক থেকেই তরুণী রায়বেরিলিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।
:ইন্ডিয়া টুডে