সৌদির তেলখনিতে আঘাত হানে ১৮টি ড্রোন ও ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র

তেল শোধনাগারে হামলায় ব্যবহৃত ১৮টি ড্রোন ও ৭টি ক্রুজ মিসাইলের ধ্বংসাবশেষ প্রদর্শন করে সৌদি আরব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে এগুলো প্রমাণ করে ওই হামলায় জড়িত ছিলো ইরান। তারা বলছে আঠারোটি ড্রোন আর সাতটি ক্রুজ মিসাইল একটি জায়গা থেকেই ছোঁড়া হয়েছিলো কিন্তু এগুলো ইয়েমেন থেকে ছোড়া হয়নি বলেই দাবি তাদের।

ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা অবশ্য আগেই এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে শনিবারের ওই হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। একই সঙ্গে দেশটি যে কোনো হামলার স্বীকার হলে পাল্টা জবাব দেয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও দাবি করেছিলো যে ওই হামলার পেছনে ইরানই ছিলো।

তিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে ওই হামলার প্রমাণাদি উপস্থাপন করে সৌদি আরব। তাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু ধ্বংসাবশেষ রাখা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ১৮টি ড্রোন ও ৭টি ক্রুজ মিসাইল এক জায়গা থেকেই ছোঁড়া হয়েছিল, কিন্তু এগুলো ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল তুর্কি আল মালকি বলেন, প্রমাণাদি থেকে এটা নিশ্চিত,হামলা এসেছিলো উত্তর দিক থেকে এবং সেটি ‘প্রশ্নাতীতভাবেই ইরান দ্বারা পরিচালিত।’ যেসব ধ্বংসাবশেষ ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে তারমধ্যে ইরানের ইউএভি বা চালকবিহীন উড়ন্ত বাহনের ‘ডেল্টা উইং’ ছিল বলেও দাবি করা হয়। এ বিষয়ে মালকি বলেন, ‘কম্পিউটারে ইউএভি ডাটা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে এটি ইরানের।’

তিনি ম্যাপ ও ক্ষয়ক্ষতির ছবিসহ আবকাইকে চালকবিহীন যানের হামলার ভিডিও দেখিয়ে বলেন, যেসব ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে সেগুলো এসেছিলো দক্ষিণ দিক থেকে। ১৮টি চালকহীন বাহন দিয়ে হামলা হয় আবকাইক তেল শোধনাগারে এবং সাতটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করে দুটি জায়গায়। এর মধ্যে চারটি খুরাইজ তেলক্ষেত্র ও তিনটি আবকাইকে এসে আঘাত হানে।

তবে ঠিক কোথা থেকে হামলাটি এসেছে সে জায়গাটি চিহ্নিত করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বের করা মাত্রই প্রকাশ করা হবে।’ এ ঘটনায় ইরানকে সরাসরি দায়ী করে বুধবার সৌদি আরবে গিয়ে একে ‘অ্যাক্ট অব ওয়ার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘এ ঘটনার জবাব দেয়ার জন্য ‘অনেক বিকল্প’ ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। চূড়ান্ত একটি বিকল্প আছে এবং এছাড়া আরও বিকল্পও আছে। এবং আমরা দেখবো। আমরা শক্তিশালী অবস্থানে আছি।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এসব হুমকির বিপরীতে ইরানের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া এখনও আসেনি। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংবাদসংস্থা ইরনাকে দেয়া একটি কূটনৈতিক নোটের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ‘ইরানের বিপক্ষে কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে ইরান সাথে সাথে এর জবাব দিবে।’ স্যাটেলাইটের ছবি ও অন্যান্য প্রমাণাদির বিষয়কে বানোয়াট উল্লেখ করে হুতির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘স্যাটেলাইট থেকে নেয়া ছবিগুলো বানানো এবং সৌদি আরব প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি চেপে গেছে।’ সূত্র : বিবিসি,