মুখোশ পরা লাঠি হাতে একদল লোক গতকাল রোববার হংকংয়ের ইউয়েন লং এলাকার একটি রেলস্টেশনে হামলা চালিয়েছে। হংকংয়ের বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি সন্দেহভাজন দুর্বৃত্তদের এ হামলা তদন্ত করে দেখছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাদা টি–শার্ট পরা একদল লোক প্ল্যাটফর্মে এবং ট্রেনের ভেতরে সহিংস হামলা চালায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। হামলাকারীরা কারা এবং কী উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রী এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা ল্যাম চিউক-তিং এ হামলার ভিডিও ধারণ করেন।
স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীদের অনেকে এর আগে গতকাল দিনের বেলায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গতকাল সকালে বিক্ষোভকারীরা চীনের কেন্দ্রীয় সরকারি ভবন ঘেরাও করে। ভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়।
এ হামলায় আহত হয়েছেন ল্যাম চিউক-তিং। সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গণমাধ্যম আরটিএইচকের প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো সমস্যা হতে যাচ্ছে—আঁচ করতে পেরে আগে থেকেই পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। এরপরও পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি। ল্যাম বলেন, পুলিশ জনগণকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের গাফিলতিতেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালানোর সুযোগ পেয়েছে। ডেমোক্রেটিক পার্টি পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।
ল্যাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, হংকং কি এখন দুর্বৃত্তদের যা খুশি তা–ই করার অনুমতি দিচ্ছে? প্রকাশ্যে পথেঘাটে অস্ত্র নিয়ে লোকজনের ওপর চড়াও হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে?
প্রায় দুই মাস ধরে অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। নতুন এ আইন অনুযায়ী চীন চাইলে সন্দেহভাজন অপরাধীদের কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণাধীন নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ও আধা স্বায়ত্তশাসিত হংকং ১৯৭৭ সালে চীনের অধীনে ফেরার পর থেকে ‘এক রাষ্ট্র দুই নীতি’র অধীনে পরিচালিত। দুই দশক ধরে অপরাধী প্রত্যর্পণ বিষয়ে চীনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চললেও এ ধরনের কোনো আইন প্রণীত হয়নি নিজস্ব আইনে পরিচালিত হংকংয়ে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। হংকংবাসীর ভয়, প্রস্তাবিত আইনের ফলে মূল ভূখণ্ডের স্বচ্ছতাবিহীন আদালতের প্যাঁচে আটকে যাবে অনেক নাগরিক। এর ফলে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে সম্মান ক্ষুণ্ন হবে হংকংয়ের।খবর : প্রথম আলো