জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ, নিপীড়ন ও সংঘর্ষের কারণে সাত কোটিরও বেশি লোক তাদের নিজ দেশ ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুতের এই সংখ্যা তাদের হিসাবে গত ৭০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সংস্থাটির ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ লোক ওই সময়ে বাস্তচ্যুত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংখ্যা এর আগের বছরের চেয়ে ২ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি। আর গত ২০ বছরের সঙ্গে এই সংখ্যা তুলনা করে বলা হয়েছে, এটি ওই সময়ের চেয়ে এখন দ্বিগুণেরও বেশি দাঁড়িয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, সংখ্যাগত হিসাবে প্রতিদিন গড়ে নতুন করে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে ৩৭ হাজার মানুষ।
ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, এই পরিসংখ্যান থেকে আমরা এটাই বলতে পারি—এ ধরনের সংকট থেকে মানুষের মুক্তি পেতে আমাদের তাদের নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদি নিশ্চয়তা প্রদান করা জরুরি। কেননা, এসব ভাগ্যহত মানুষের যদি আমরা নিরাপত্তা বিধান করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে, যা সবার কাছে একটা আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, যদিও এসব শরণার্থী ও অভিবাসীর ভাষা প্রায়ই বিভেদমূলক, তারপরও এদের বিষয়ে আমরা অনেক কিছুরই সাক্ষী হয়ে আছি। বিশেষ করে তাদের দুর্দশা ও কষ্ট আমরা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রত্যক্ষ করেছি। সে হিসাবে আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা বলা যেতে পারে অনেক বেশি। তারপরও এ নিয়ে আমরা অনেকের উদারতা ও সংহতি দেখেছি। অনেক দেশ মানবতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা মানবতার অনন্য উদাহরণ। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের বলতে হচ্ছে, এখনই বিশ্ব নেতারা যদি এ ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেন তাহলে এর ভবিষ্যৎ সত্যিকার অর্থেই কল্পনা করা যায় না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে সকল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে, আমরা মনে করি বাস্তব চিত্র আরো ভয়াবহ। কেননা, সাম্প্রতিক সময়ে ভেনিজুয়েলা থেকেও অনেক মানুষ অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত বছরে এ সংখ্যা ছিল ৪০ লাখ। এটি বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে একটি বড় ধরনের বাস্তুচ্যুতের ঘটনা।
লেটেস্টবিডিনিউজ/এসকেবি