ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার চুক্তি হিসেবে পরিচিত ‘ব্রেক্সিট’ কার্যকরে ব্যর্থ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের ঘোষণার সময় আবেগে ভেঙে পড়লেন। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বিদায়ী ভাষণ দেয়ার সময় চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি তিনি।
এর আগে শুক্রবার সকালের দিকে টরি ব্যাকবেঞ্চ প্রধান স্যার গ্রাহাম ব্রাডির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে পদত্যাগের বিষয়ে তার কর্মকর্তাদের জানান ব্রিটেনের দ্বিতীয় এই নারী প্রধানমন্ত্রী।
সংক্ষিপ্ত বিবৃতির শেষে তার গলা ধরে আসে, চোখ হয়ে ওঠে অশ্রুসজল। তবে কনজারভেটিভ পার্টি একজন নতুন নেতা নির্বাচিত না করা পর্যন্ত তিনি অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
মে বলেন, তিনি আশা করেন, তার উত্তরসূরী যিনি হবেন; তিনি ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে পারবেন, যার পক্ষে ২০১৬ সালের গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
ব্রেক্সিট কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে মে’র পরিকল্পনাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এটি পর পর তিনবার তোলা হলেও তা পাস করাতে ব্যর্থ হন মে।
বিরোধীদল লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধিত আরেকটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন তিনি। কিন্তু
তার এই পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ পার্টি ও বিরোধী দল লেবার পার্টির তীব্র সমালোচনা করে। ফলে তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় মে’র নতুন এই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখবে না।
পরে দলের ভেতর থেকেই তেরেসা মে’র পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। সাত মিনিটের বিদায়ী ভাষণে তেরেসা মে বলেন, আমি আমার সাধ্যের সেরা কাজ করেছি। চুক্তিতে সমর্থন আদায়ে এমপিদের রাজি করাতে আমি সবকিছুই করেছি…দুর্ভাগ্যজনক যে, আমি সেটা করতে পারিনি।
‘এটা এখন এবং ভবিষ্যতেও আমার কাছে গভীর অনুশোচনার বিষয় হয়ে থাকবে যে, আমি বেক্সিট চুক্তি কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘ আগামী ৭ জুন তিনি কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।’ তেরেসা মে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ায় এখন দলটির একজন নেতা নির্বাচন করা হবে। পরে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হতে পারাটা ছিল আমার জীবনের অন্যতম সম্মান। আশা প্রকাশ করে তেরেসা মে বলেন, দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শেষ নারী প্রধানমন্ত্রী নন। তবে সব দলের এমপিদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপোষ’ কোনো ধরনের নোংরা শব্দ নয়।