দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর সুদানের শাসন ক্ষমতায় থাকা ওমর আল-বশিরকে সরিয়ে দিয়ে যিনি দেশটির সামরিক কাউন্সিলের প্রধান হয়েছিলেন, সেই আওয়াদ ইবনে ওয়ুফকেও ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র একদিন পরেই সরে দাঁড়াতে হলো।
সুদানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার এক ঘোষণায় সামরিক কাউন্সিলের প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ ইবনে ওয়ুফ পদত্যাগের এই ঘোষণা দেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ওয়ুফ পদত্যাগ করায় সুদানের সামরিক বাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আবদেল রাহমান বুরহানকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
কয়েকমাসের টানা বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিন টেলিভিশনে এক ঘোষণায় ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার কথা ঘোষণা করেন আওয়াদ ইবনে ওয়ুফই।
তিনি বলেন, ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে একটি নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক কাউন্সিল দুই বছরের জন্য সুদানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। নির্বাচন আয়োজন করা হবে এই কাউন্সিলের মূল দায়িত্ব।
এছাড়া সুদানে তিনমাসের জন্য জরুরি অবস্থা ও একমাসের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে বলেও জানান আওয়াদ ইবনে ওয়ুফ।
তবে কারফিউ সত্ত্বেও রাজধানী খার্তুমের রাস্তাগুলো দখল করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। সামরিক কাউন্সিলের প্রধান ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের ঘনিষ্ঠজন– এমন দাবি করে বিক্ষোভকারীরা রাজপথ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই দেশটির শাসন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ওয়ুফ।
সুদানের সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ক্ষমতা দখলে রাখতে চায় না। তারা চায় আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুদানের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হোক।
প্রসঙ্গত, আওয়াদ ইবনে ওয়ুফ দারফুর সংঘাতের সময় সুদানের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ছিলেন। ওই সময় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে সুদানের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে গত ডিসেম্বর থেকে সুদানে বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েকমাসের এই বিক্ষোভের মুখেই বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত হন ওমর আল-বশির। আন্দোলন চলার সময় অন্তত ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়।