দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র। এর নিকটতম দ্বীপ হল ৩০০ মাইল পূর্বে অবস্থিত কিরিবাতির বানাবা দ্বীপ। নাউরু বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দ্বীপ রাষ্ট্র (ক্ষেত্রফল মাত্র ২১ বর্গ কিলোমিটার)।
পৃথিবীর সবচেয়ে মোটা মানুষদের বসবাস এই দেশে। অথচ এদের নিজস্ব কোনো খাবার নেই ! অদ্ভুদ এক দেশ নাউরু ! অনেকে হয়ত এর নামও কখনো শুনেননি। এর অবস্থান ঠিক কোথায়, না বললে আন্দাজও করতে পারবেন না। এই নাউরু দেশটি সম্পর্কেই আজ আমরা জানবো…
কিরিবাতির প্রতিবেশী দেশ নাউরু। তবে ছোট দেশ হলেও এদের অবস্থান গিয়ে পৌঁছেছিলো কমনওয়েলথ এবং অলিম্পিক গেমস পর্যন্তও ! অতটা ছোট করে দেখার মত দেশ নয় নাউরু!
নাউরু সম্পর্কিত অদ্ভুত ও মজার কিছু তথ্য
১/ নাউরু একটি ডিম্বাকৃতির দেশ।
২/ ফসফেট মাইনিং, অফশোর ব্যাংকিং এবং নারিকেল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এগুলো মূলত তাদের আয় রোজগারের মূল উৎস।
৩/ নাউরুর নিজস্ব ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা খুব কম। তাই এদের ভাষার উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে কেউই কিছু জানেনা। এবং ভবিষ্যতেও আর কখনো এদের ইতিহাস সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়।
৪/ ১৮৮৮ সালে নাউরু জার্মানীর সাথে সংযুক্ত ছিলো।
৫/ পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে নাউরু ১৯৯৯ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনের সাথে যুক্ত হয়।
৬/ ১৯৬৮ সালে আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে আলাদা হয়ে নাউরু স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
৭/ ১৯০৬ সালে আমেরিকা খনিজ সম্পদের খোঁজে নাউরুর ৯০% ভূমি খনন করে ফেলে।
৮/ বিশ্বের শুধুমাত্র তিনটি দেশ রয়েছে যেগুলোর ভুমি ফসফেট পাথরের। এরমধ্যে একটি হচ্ছে নাউরু।
৯/ প্রতিবেশী দু তিনটি দেশ ছাড়া আর কোনো দেশে নাউরুর কোনো অ্যাম্বাসি নেই। কোনো দেশ থেকে নাউরু যেতে হলে ফিজির পোর্ট ব্যবহার করে দেশটিতে যেতে হয়।
১০/ নাউরুতে শুধু একটা এয়ারপোর্টই আছে। যার আয়তন মাত্র ৩০ কিলোমিটার !
১১/ ১৭৯৮ সালে এক ব্রিটিশ নেভিগেটর এই দেশটি আবিষ্কার করেন।
১২/ ফসফেট বিক্রি করেই নাউরু সৌদি আরবের চেয়েও বেশি অর্থ উপার্জন করে !
১৩/ দেশটির একমাত্র রেললাইনের দৈর্ঘ্য মাত্র ৫ কিলোমিটার।
১৪/ পৃথিবীর সবচেয়ে মোটা মানুষদের বসবাস নাউরুতে। এখানকার প্রতিটা মানুষই অস্বাভাবিক রকমের মোটা ও স্বাস্থ্যবান।
১৫/ পৃথিবীর সবচেয়ে কম সংখ্যক মানুষ এই দেশটিতে ভ্রমণ করেছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই দেশটিতে ভ্রমণ করেছে মাত্র ৩০০ জন ট্যুরিস্ট !
নাউরু দেশটির খাবার
নাউরু চাষাবাদের অযোগ্য একটি দেশ। এখানে কোনোরকম শস্যই উৎপাদন হয়না। ফলমুল থেকে যাবতীয় সকল প্রকার খাদ্যই বাইরে থেকে আমদানী করে আনা হয়। নিজস্ব খাবার বলতে কিছু সামুদ্রিক মাছই শুধু রয়েছে, যা তারা সমুদ্র থেকে সারাবছর সংগ্রহ করে খেতে পারে। নাউরুর রেস্টুরেন্টগুলোয় তারা নিজেরাই মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় প্রস্তুত করে পরিবেশন করেন।
খাবারপ্রেমিকদের জন্য নাউরু অত্যন্ত বাজে একটি জায়গা। যারা শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের লোকাল ডিশ ও স্ট্রীটফুড খাওয়ার জন্য ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য নাউরু থেকে দুরে থাকাই ভালো !