উইন্ডোজ ফোন ছাড়তে পরামর্শ দিয়েছে মাইক্রোসফট

উইন্ডোজ ১০ মোবাইল প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে দিতে বলেছে মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, উইন্ডোজ মোবাইল ব্যবহারকারীরা আইফোন বা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে চলে যেতে পারেন। মাইক্রোসফট সমর্থিত সাপোর্ট পেজে ওই তথ্য জানানো হয়েছে।

মাইক্রোসফট বলছে, এ বছরের ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে থেকে উইন্ডোজ ১০ মোবাইল প্ল্যাটফর্মে বিনা পয়সায় নিরাপত্তা আপডেটসহ সমর্থন দেওয়া হবে না।

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) সাপোর্ট পেজে মাইক্রোসফট বিবৃতিতে বলেছে, উইন্ডোজ ১০ ওপারেটিং সিস্টেম মোবাইলে সমর্থন বন্ধ হচ্ছে। গ্রাহকদের অনুরোধ করছি, আপনারা অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড বা আইওসে চলে যান। আমাদের যেসব মোবাইল অ্যাপস রয়েছে সেগুলো যাতে অন্যান্য প্লাটফর্মেও কাজ করে সেভাবেই প্রস্তুত করেছি।

মাইক্রোসফট বলছে, এখন থেকে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট করটানা এখন থেকে অ্যামাজনের অ্যালেক্সা এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতা করবে না। এর পরিবর্তে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে করটানার সেবা পাওয়া যাবে।

মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হচ্ছে-পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের মোবাইল অ্যাপস, ও বিভিন্ন ডিভাইস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমর্থন দেওয়া।

গত বছরের মার্চ মাসে উইন্ডোজ ফোন বিভাগের সাবেক প্রধান টেরি মেয়ারসন বিষয়টি খোলসা করেন। তিনি বলেন, অ্যান্ড্রয়েডের মতো বিশাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতো অবস্থা উইন্ডোজ ফোনের ছিল না।

২০০৭ সালে মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যাপল যখন প্রথম আইফোন বাজারে ছাড়ে, তখন মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমার দম্ভভরে ঘোষণা করেছিলেন, ফোনের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করার কোনো সম্ভাবনা আইফোনের নেই। বলমার তখন গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার বিষয়টিতে এতটাই মরিয়া ছিলেন যে, মোবাইল ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড যে মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে, তা তিনি ধরতে পারেননি।

যখন আইফোন বাজারে আসে, তখন পর্যন্ত মোবাইল বাজারে লড়াই করার ক্ষমতা ছিল মাইক্রোসফটের। ওই সময় উইন্ডোজ মোবাইলকে স্মার্টফোনের অন্যতম অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে গণ্য করা হতো। তবে ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত মাল্টিটাচ মোবাইল ওএস হিসেবে কোনো অপারেটিং সিস্টেম ছাড়েনি মাইক্রোসফট। অর্থাৎ, প্রথম আইফোন বাজারে ছাড়ার তিন বছর ও প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ফোন বাজারে আসার দুই বছর পরে মাইক্রোসফট যুদ্ধে নামে।

কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেই স্মার্টফোনের বাজার আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড-এই দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ফলে ডেভেলপাররা উইন্ডোজ ফোনের জন্য অ্যাপ তৈরিতে কোনো লাভ দেখতে পায়নি। জনপ্রিয় অ্যাপ না থাকায় উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মে খুব বেশি আগ্রহ দেখাননি স্মার্টফোন ক্রেতারা। ডেভেলপারদের নানা সুবিধা দিয়ে জনপ্রিয় অ্যাপগুলো উইন্ডোজ ফোনে আনার মরিয়া চেষ্টা চালায় মাইক্রোসফট। কিন্তু যে গতিতে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড এগিয়েছে, তার চেয়ে মাইক্রোসফটের গতি ছিল ধীর। ফলে মাইক্রোসফট শুধু পিছিয়েছে।

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস  

Scroll to Top