ufo

ইউএফও : রহস্য নাকি গুজব: পর্ব ১

আকাশ থেকে ধেয়ে আসা রহস্যময় সুপারক্রাফট!
ওরা আসে একটি দুটি তিনটি করে। কখনো ঝাঁক বেঁধে। ওরা আসে রুপালি আগুন ঝরা রাতে কিংবা ঘোর অমাবস্যার অন্ধকারে। পিরিচের মতো, চাকতির মতো জিনিসগুলো ঘুরে বেড়ায় নির্জন জঙ্গলে, বিরাণ জলাভূমিতে, সাগরে-পাহাড়ে কিংবা উষর মরুতে।

মাঝে মাঝে জিনিসগুলো হানা দেয় লোকালয়ে। টুপ করে দুয়েকটা মানুষ তুলে নিয়ে গিনিপিগ বানায়। এদের কেউ চিরতরে হারিয়ে যান, কেউ ফিরে আসেন বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা নিয়ে। তাঁরা বলেন অবিশ্বাস্য সব কাহিনি, যা হয়তো কল্পবিজ্ঞানের সিমেনা কিংবা গল্পেই ঘটা সম্ভব।

গত শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে উড়ন্ত সসার বা ইউএফও দেখার গল্পগুলো ডালপালা মেলতে শুরু করে, আশি-নম্বই দশকে এসে তা পরিণত হয় গুজবের মহিরূহে। ইউএফও বা উড়ন্ত চাকি দেখার অভিজ্ঞতার গল্প বলে সাধারণ মানুষও রাতারাতি খ্যাতির তুঙ্গস্পর্শ করেন, তেমনি বিখ্যাত সব মানুষও সস্তা জনপ্রিয়তার লোভ শামলাতে পারেন না। ফলস্বরূপ গোটা দুনিয়া জুড়ে ইউএফও চাক্ষুসকারী বলে দাবি করা লোকের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, এলিয়েন, উড়ন্ত চাকি বা ভিনগ্রহে প্রাণ নিয়ে গুঞ্জন ধীরে ধীরে শোরগোলে পরিণত হচ্ছে। ফলে এটাই এখন পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রহস্য হিসেবে।

কতটুকু সত্যি আর কতটুকু বাস্তবতা মিশে থাকে এসব গল্পে?
২০ জুলাই ১৯৬৯। চাঁদের পথে পাড়ি দিচ্ছিলেন তিন নভোচারী। নীল আর্মস্ট্রং, এডুইউন অলড্রিন এবং মাইকেল কলিন্স। অন্যরা দেখেননি, দেখেছেন কেবল অলড্রিন, তেমনটাই তিনি দাবী কেরেছেন বহু পরে। কী দেখেছিলেন সেদিন অলড্রিন? চাঁদে যাওয়ার পথে নাকি ভিনগ্রহীদের সুপারক্রাট দেখেছেন।

দেখেছেন এলিয়েনও। অলড্রিনের এই দাবি কেউ বিশ্বাস করেনি। তবে অনেক অখ্যাত লোকের কথা মানুষ বিশ্বাস করেছে। ম্যাগাজিন, টেলিভিশন কিংবা সিনেমায় এমনভাবে এলিয়েনদের বিষয়গুলো দেখানো হয়েছে, যেন মিথ্যে নয় সেসব কাহিনি।
১.
শুরুটা হয়েছিল রসওয়েল দুর্ঘটনা থেকে। ৫ জুলাই ১৯৪৭ সাল। ঝড়-বৃষ্টির রাত। নিউ মেক্সিকোর রসওয়েল এলাকার লোকজন সেই বৈরী রাতে অদ্ভুত একটা আলো দেখতে পায়। এর কিছুক্ষণ পরই ভয়ঙ্কর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। সেই রাতে ব্রাজেল নামে এক খামারির বেশ কিছু ভেড়া হারিয়ে যায়। তিনি ভেড়া খুঁজতে গিয়ে আবিষ্কার এক বিস্ফোরণস্থল। সেখানে পড়ে আছে লোহালক্কড়ের এক স্তূপ। ব্রাজেলের খামারে কোনো টেলিফোন ছিল না, রেডিও ছিল না। তাই আগের কয়েকদিন কী নিয়ে মিডিয়ায়ি তোলপাড় হচ্ছে, সেটা জানতেন পারেননি ব্রাজেল। পরদিন তিনি ধংসস্তূপ থেকে জঞ্জালগুলো কুড়িয়ে নিয়ে আসেন। পরে যখন জানতে পারেন বেশ কিছুদিন ধরে এই এলকার আকাশে এক রহস্যময় ডিস্ক বা চাকতি দেখা গেছে, তিনি স্থানীয় পুলিশের শেরিফকে খবর দেন। শেরিফ তখন রসওয়েল দুর্ঘটনার খবর দেন আর্মি এয়ার ফিল্ডকে। তারা এসে ধংসাবশেষগুলি নিয়ে যান এবং বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে আরও কিছু নমুনা সংগ্রহ করে উদ্ধারকারী দলটি।

Scroll to Top