সিটিসেলের সেই কর্মকর্তা আর নেই

দীর্ঘ ২০ বছর সিটিসেলে চাকরি করে খালি হাতে ফেরার আগে আমজাদ হোসেন দাবি আদায়ের আন্দোলনে সরব ছিলেন। কিন্তু সিটিসেল তার পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি। কর্মহীন মানুষটি বাসায় বসে থেকে অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অবশেষে ২৫ আগস্ট শুক্রবার সকালে তিনি মারা গেছেন।

আমজাদ হোসেন পিয়নের চাকরি করতেন। এই পিয়নের চাকরি আরও যারা করেছেন তাদের চাকরি বা বেতন নিয়ে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে তিনি সিটিসেল ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন বলেই পাওনা টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মীরা। সিটিসেলের মালিক পক্ষ অনেককেই সাহায্য করেছিল কিন্তু তিনি কিছুই পাননি।

সিটিসেল কর্মীদের পাওনা আদায়ের আন্দোলনের সময় তিনি মানবিক আবেদন সম্বলিত লেখা একটি ব্যানার নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন। তার হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘আমি ২০ বছর যাবত সিটিসেলে। আমার ও পরিবারের কি হবে?’ সেই মানববন্ধনে তাকে কান্না করতেও দেখা গিয়েছিল।

আমজাদ হোসেন সিটিসেলে ২০ বছর ধরে চাকরি করলেও প্রতিষ্ঠানটির মালিক এম মোর্শেদ খানের ন্যাশনাল টেলিভিশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে আরও ২০ বছর আগে থেকে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি নিজে ন্যাশনাল টিভি মাথায় করে বিক্রি করতেন।

আমজাদ হোসেনের সহকর্মীরা বলেন, ‘তিনি মোর্শেদ খানের সাথে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কাজ করছেন। ন্যাশনাল টেলিভিশনে তার কাজের গতি দেখে পরে তাকে সিটিসেলে নিয়ে আসা হয়। তিনিসহ মোট চারজন কর্মী সিটিসেলে এই দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। ফলে তার প্রতি সিটিসেল কর্তৃপক্ষের আরও বেশি মানবিক হওয়া উচিৎ ছিল। যা তিনি পাননি।’

বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের (পিবিটিএলইইউ) সভাপতি আশরাফুল করিম বলেছেন, ‘গত তিনমাস আগে আমজাদ ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়েছিল। তার কিডনিতে সমস্যার কথা বলেছিলেন আমাকে। তখন কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য তিনি সিটিসেলে গিয়েছিলেন। মোর্শেদ খান তাকে পরে কিছু একটা সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটাও তিনি পাননি।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আমজাদ হোসেনের জন্য একটি মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১২১৬ ঘণ্টা, ২৬ আগস্ট, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ

Scroll to Top