কেউ দেখছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, জেডটিই এর সার্ভিস রোবট। কেউ বা ভার্চ্যুয়াল রিয়ালেটি (ভিআর) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে লাইট, ফ্যান কিংবা ডোর লক। বৈদ্যুতিক বাই সাইকেল, মোটরসাইকেল ও আছে। আছে ফায়ার ফাইটার ছাড়াই অগ্নিনির্বাপন প্রযুক্তি। রয়েছে ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) চশমা পরে ভার্চ্যুয়ালি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঘুরে দেখার ও ৩৬০ ডিগ্রি ভিড়ও সেল্ফি তোলার সুযোগ।
আর প্রযুক্তির এমন সমাহারের দেখা মিলবে তিন দিনব্যাপী চলা ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায়। যেখানে শিক্ষার্থী, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও ডিজিটাল টেলিকমিউনেকেশন প্রতিষ্ঠানের বাহারী পণ্যের প্রদর্শন চলছে।
আজ শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেলার শেষ দিনে প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এই মেলার আয়োজন করেছে। ৫২টি প্যাভিলিয়ন এবং ৭৭টি স্টলে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে।
প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক কেবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ), মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা, ভিআর, ইলেকট্রনিক বাইসাইকেল-মোটরসাইকেল দেখতে শিক্ষার্থী, দর্শনার্থীদের ভীড় ছিল বেশি। নিজেদের উদ্ভাবন নিয়ে শিক্ষার্থীরা এসেছে এই মেলায়।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের প্যাভিলিয়নে ৫.৫জি, এন্টারপ্রাইজ বিজনেস সলিউশন, হুয়াওয়ে ক্লাউড ও ডিজিটাল পাওয়ারের মতো যুগান্তকারী প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে। রয়েছে নতুন উদ্ভাবন সার্ভিস রোবট, স্মার্ট পোর্ট ও ডিজিটাল পাওয়ার সলিউশন ডেমো সাইট।
প্যাভিলিয়নে এসে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে গ্রাহকদের হুয়াওয়ে ক্লাউড কেনায় ২০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছে ক্রেতারা। মেলায় আগত অতিথিদের জন্য প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর কুইজে অংশ নিয়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে হুয়াওয়ে।
মেলায় ১ লাখ ২৭ হাজার টাকায় মিলছে ওয়ালটনের ইলেকট্রনিক মোটরসাইকেল তাকইয়ন। ওয়ালটনের বিক্রয় প্রতিনিধি রিফাত বলেন, রাস্তায় চলাচলের জন্য বাইকটি বিআরটিসি কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে। মোটরসাইকেলটি দুটো ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছে। পুরোপুরি চার্জে বাইকটি সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার চলতে পারবে। প্রতি কিলোমিটারে মাত্র ১৫ পয়সার বিদ্যুৎ খরচ হবে। এছাড়া ল্যাপটপ, গেমিং পিসি, একসেসরিজ, সিনে ডি মনিটর, স্মার্টওয়াচ ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে ওয়ালটনের স্টলে।
বিটিআরসির স্টলে লটারির মাধ্যমে ৩০ জন গ্রাহককে দেওয়া হচ্ছে গোল্ডেন বা আকর্ষণীহ মোবাইল নম্বর। লটারিতে অংশ নিতে দর্শনার্থীদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেলার শেষ দিনেও গ্রামীণ, রবি ও বাংলালিংকের গ্রাহকরা এই সুযোগ পাবেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গ্রাহকরা ফর্ম পূরণ করে লটারিতে অংশ নিতে পারছেন। আর সন্ধ্যায় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিজয়ীদের নাম। আলাপ, টেলিসেবা, জিপন- এই তিন সেবা নিয়ে মেলায় এসেছে বিটিসিএল।
স্ট্যাটা আইটি লিমিটেডে স্মার্ট ডোর লক দেখছিলেন সুমিত দেবনাথ। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো স্মার্ট ডোরলকের ব্যবহার হচ্ছে অনেক আগে থেকে। কিন্তু বাংলাদেশে এটাই প্রথম দেখলাম। দাম নাগালের বাইরে হওয়ায় এটা উচ্চবিত্তের পণ্য হয়ে গেছে।
স্ট্যাটা আইটি লিমিটেডের বিক্রয় প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট ডোর লকের দাম বেশি হলেও স্মার্ট সুইচের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই আছে। স্মার্ট সুইচের মাধ্যমে ক্রেতা শুধু টাচ কিংবা রিমোর্টের মাধ্যমে লাইট ও ফ্যান নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথক কর্নারের আয়োজন করেছে গেম নির্মাতা বাংলাদেশি কোম্পানি ‘ব্যাটারি লো ইন্টারঅ্যাকটিভ’। প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হচ্ছে। মেলায় শিক্ষার্থীদের তৈরি অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার ক্ষতি কমাতে সক্ষম ফায়ার ফাইটার রোভার মেশিন সবার নজর কেড়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় যেখানে মানুষ পৌঁছাতে পারে না, সেখানে রোবটটির মাধ্যমে আগুন নেভানো সম্ভব।