মহাকাশে যেতে আরেকজন কোটিপতি উদ্যোক্তা প্রস্তুত। পর্যটক হিসেবে স্পেস এক্সের রকেট ক্যাপসুল দিয়ে তিনি যাবেন মহাকাশে। অ্যাস্ট্রো ট্যুরিস্ট টিমের সঙ্গে পৃথিবীর কক্ষপথে এই ফ্লাইটটি হবে বিশ্বের প্রথম সিভিলিয়ান ফ্লাইট। ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভাল থেকে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাবে এ রকেট।
এই বিলিওনিয়ার ৩৮ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক জ্যারেড ইসাকম্যান। ইকমার্স ফার্ম শিফটফোর পেয়মেন্টের প্রধান নির্বাহী এই টেক মুঘল তিন দিনের এই ট্রিপে নেতৃত্ব দেবেন মোট তিনটি স্পেস ফ্লাইটের। ইসাকম্যানের সঙ্গে স্পেস ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে পৃথিবীর কক্ষপথে যাবেন আরও ৩ জন পর্যটক।
বিলিওনিয়ার ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের ফ্যালকন নাইন রকেটটি নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ছেড়ে যাবে। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে ক্যাপসুলের জানালা। পরে আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে জানালা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই মিশন সফল হলে বাণিজ্যিক স্পেস ট্যুরিজমের পথে এগিয়ে যাবে মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো।
স্পেস এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে টিকিট কিনতে অনেক ধন্যাঢ্য ব্যক্তি আগ্রহ দেখাচ্ছে। অনেকে অগ্রিম টিকিটও কিনছেন, যেন কিছু সময়ের জন্য সুপারসনিক ফ্লাইটে করে মহাশূন্যে ভাসতে পারেন, নিজেকে ওজনহীন মনে করতে পারেন আর মহাকাশ দেখতে পারেন।
তবে রকেটে করে মহাকাশে ভ্রমণ বরাবরই বিপজ্জনক হওয়ায় এ নিয়ে সমালোচনা আর গবেষণারও শেষ নেই। এ জন্য মহাশূন্যে ভাসতে হলে অবশ্যই ধনী হতে হবে, এর পাশাপাশি হতে হবে সাহসী। এই ফ্লাইট কক্ষপথে পৌঁছানোর পর ক্রু সঙ্গে থাকা পর্যটকদের শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখবেন। পৃথিবীতে মানুষের শারীরিক অবস্থা কেমন থাকে আর মহাশূন্যে স্পেসফ্লাইটে কেমন থাকে, তা নিয়ে গবেষণা করবেন।
সব সাধারণ ক্রুদের নিয়ে স্পেসএক্সের এই ফ্লাইট মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে যাবে। এই মহাকাশযান ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার করে প্রদক্ষিণ করবে। গতি থাকবে ঘণ্টায় ১৭ হাজার মাইল। এই রকেট উঠবে ৫৭৫ কিলোমিটার বা ৩৬০ মাইল ওপরে। এই উচ্চতা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন বা হাবল স্পেস টেলিস্কোপের কক্ষপথ থেকেও অনেক ওপরে।
ইন্সপায়রেশন ক্রু ফ্লাইটে দুজন পাইলটই প্রশিক্ষিত। একজন ইসাকম্যান আরেকজন বিজ্ঞানী সিয়ন প্রোক্টোর। মেডিকেল অফিসার হিসেবে থাকবেন হ্যায়লে আরসেনাক্স। মিশন স্পেশালিস্ট হিসেবে থাকবেন ক্রিস সেমব্রোস্কি, যিনি মার্কিন এয়ারফোর্সে ডাটা ইঞ্জিনিয়ার।
এই স্পেস ফ্লাইটের ক্রু সদস্যরা বলছেন, ১০০ জনে একজন পাওয়া যায় এমন সাহসী নভোচারী। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এখন গাড়ি বাড়ি কেনার চেয়ে আড়াই লাখ ডলার দিয়ে মহাকাশ ভ্রমণের কথাই বেশি ভাবেন।