অনলাইনে কম্পিউটার কারসাজির মাধ্যমে লক্ষাধিক নারীর ভুয়া নগ্ন ছবি!

কম্পিউটার কারসাজির মাধ্যমে অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করা যায় এবং বাস্তব আর অবাস্তবকে প্রায় পার্থক্য শুন্য করা যায়। চোখ আকাশে ওঠার খবর। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটেছে। কম্পিউটার কারসাজি করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে কমপক্ষে এক লাখ নারীর নগ্ন ছবি। কিন্তু এসব ছবি ভুয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবিকে ব্যবহার করে কম্পিউটার কারসারির মাধ্যমে নগ্ন করে ফেলা হয়েছে ওইসব নারীকে। এরপর সেই ছবি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে।

বিবিসি বলছে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নারীদের পোশাক খুলে নেয়া হয়েছে। যাদের এভাবে টার্গেট করা হয়েছে, তার মধ্যে কিছু আছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক। গোয়েন্দা বিষয়ক কোম্পানি সেনসিটি এসব তথ্য ধরে ফেলেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। কিন্তু নারীদের পোশাক খুলে এভাবে নগ্ন করছে যারা, তারা একে নিতান্তই একটি বিনোদন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

যে সফটওয়্যার ব্যবহার করে এসব করা হয়েছে তা যাচাই করেছে বিবিসি। কিন্তু দুর্বল ফল এসেছে তাতে। সেনসিটি দাবি করেছে এক্ষেত্রে ‘ডিপফেক বট’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ডিপফেকস হলো কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট। কখনো কখনো তা বাস্তবতাভিত্তিক ছবি ও ভিডিও তৈরি করে বাস্তব টেমপ্লেটের ওপর ভিত্তি করে। এর অন্যতম একটি ব্যবহাররীতি হলো সেলিব্রেটিদের ভিডিও ক্লিপ দিয়ে ভুয়া পর্নোগ্রাফিক ভিডিও তৈরি করা।

এদিকে সেনসিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জিও পাত্রিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষদের ছবি ব্যবহার করে তাকে নগ্ন করে ফেলার বিষয়টি তুলনামূলকভাবে নতুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উন্মুক্ত রাখা হয় এমন যে কারো ছবিই এই চক্রের টার্গেটে পড়তে পারেন। কৃত্রিম এই বৃদ্ধিমত্তা পরিচালিত ‘বট’টি থাকে টেলিগ্রাম চ্যানেলের ভিতরে। তাকে ব্যবহারকারী একজন নারীর ছবি পাঠিয়ে দিলেই কয়েক মিনিটের মধ্যে তার একটি নগ্ন ডিজিটাল ছবি বেরিয়ে আসে। এর জন্য বাড়তি খরচ করতে হয় না।

এরপর বেশ কিছু ছবি নিয়ে যাচাই করেছে বিবিসি। ব্যবহার করেছে সব রকম অপশন। কিন্তু কোনোটিই পরিপূর্ণ বাস্তবসম্মত দেখায় না। এ ধরনের একটি অ্যাপ গত বছর বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন মনে করা হচ্ছে, ওই অ্যাপের একটি ‘ক্র্যাকড ভার্সন’ রয়ে গেছে। এই সার্ভিসের প্রশাসক বা এডমিন নিজেকে শুধু ইংরেজি অক্ষর ‘পি’ দিয়ে প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি তেমন কিছু কেয়ার করি না। এটা হলো একটা বিনোদন, যেখানে কোনো সহিংসতা নেই। এতে কেউ কাউকে ব্লাকমেইল করবে না। কারণ, যেসব ছবি তৈরি করা হচ্ছে গুনগত মানের দিক দিয়ে তা অবাস্তব।

সেনিসিটি রিপোর্ট করেছে যে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টার্গেট করা হয়েছে এক লাখ ৪ হাজার ৮৫২ জনকে। এসব নারীকে নগ্ন করে তাদের ছবি প্রকাশ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
: বিবিসি

Scroll to Top