গ্রামীণফোন বাংলাদেশের জিএসএম ভিত্তিক একটি মোবাইল ফোন সেবা প্রদানকারী কোম্পানি। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৩ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে গ্রামীণফোন, যা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ কম। সোমবার (১৯ অক্টোবর) গ্রামীণফোন এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২৫ শতাংশ মার্জিন নিয়ে এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৮৯০ কোটি টাকা। শেয়ার প্রতি মূল্য (ইপিএস) ৬ দশমিক ৫৯ টাকা। নয় মাস শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৭৬ লাখ যার মধ্যে ৫৪ দশমিক ১ শতাংশ বা ৪ কোটি ২০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রথম মাসগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে শুরু হওয়ার বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন ব্যবসায়িকভাবে ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে এই প্রান্তিকে বিরুপ আবহাওয়া আমাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলেছে।
মানুষের কাছে ফোরজি সেবা পৌঁছে দিতে তৃতীয় প্রান্তিকে আমাদের ফোরজির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। শক্তিশালী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এ সময়ে গ্রাহকদের ফোরজিতে রূপান্তর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আগের প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেশি গ্রাহক আমাদের নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রস্তাবিত টাওয়ার গাইডলাইনের অনুমোদন দিয়েছেন যেটি আমাদের নতুন নেটওয়ার্ক সাইট স্থাপনে সহায়তা করবে এবং একইসঙ্গে দেশব্যাপী গ্রাহকদের প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও ভালো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, আমাদের মানসম্পন্ন পণ্য, সেবার ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আমাদের প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করছি। আমাদের এমপ্লয়ি, পার্টনার এবং স্টেকহোল্ডারদের জন্য সর্তকতা বজায় রাখতে আমরা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবো।
গ্রামীণফোনের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি ও বন্যা নতুনভাবে আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৮ দশমিক ১ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর তৃতীয় প্রান্তিকে আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে ফিরে আসতে সমর্থ হয়েছি। এ সময়ে ভয়েস ও ডেটাসহ মোট রাজস্ব আদায়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় প্রথম নয় মাসে ডিজিটাল রির্চাজে উল্লেখযোগ্য পরিমান প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, গ্রামীণফোন গ্রাহক সেবা উন্নয়নে ও ডেটার প্রবৃদ্ধিতে পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ অব্যাহত রেখেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ৩২০ কোটি (লাইসেন্স ও লিজ বাদে) টাকা বিনিয়োগ করেছে। এ সময়ে ১ হাজার ৭০টি নতুন ফোরজি সাইট স্থাপন করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৪৮১। ২০২০ সালের প্রথম নয় মাসে গ্রামীণফোন সরকারের কোষাগারে কর, ভ্যাট, ডিউটি, ফোরজি লাইসেন্স ও স্পেকটার্ম এসাইনমেন্ট বাবদ মোট রাজস্বের ৬৮ শতাংশ বা ৭ হাজার ১২৭ কোটি টাকা জমা দিয়েছে।