প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দমনে ‘এয়ার ফিল্টার’ উদ্ভাবন!

এবার চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাস দমনে বিশেষ একটি পন্থা উদ্ভাবন করেছেন বলে ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টন দাবি করেছে। তারা এক ধরনের ‘এয়ার ফিল্টার’ তৈরী করেছেন যা করোনাভাইরাসকে গ্রাস করতে সক্ষম। আর এই এয়ার ফিল্টার তৈরী হয়েছে নিকেল দিয়ে।

এটি ৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় থাকবে। করোনাভাইরাসের মূল জার্ম হচ্ছে সার্স-কোভ-২। এই ফিল্টার সেই জার্মের ৯৯.৮ শতাংশকেই নি:শেষ করতে সক্ষম বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন।

পৃথক একটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষাকালে দেখা যায় যে, এ্যানথ্র্যাক্স স্পোর্স’কেও এই ফিল্টার হত্যা করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আরো দাবি করেন, এই ফিল্টার এয়ারপোর্ট এবং ফ্লাইটে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া অফিস, স্কুল এবং বিনোদন-জাহাজেও ব্যবহার করা হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো সহজ হবে।

এই গবেষণা টিমের অন্যতম সদস্য এবং ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টনে ‘টেক্সাস সেন্টার ফর সুপারকন্ডাক্টিভিটি’র পরিচালক ঝিফেং রেন রবিবার আরও বলেছেন, ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে কমিউনিটিকে স্বাভাবিক করতে এই ফিল্টার অপরিসীম ভূমিকা পালন করবে। এই গবেষণা টিমে আরো রয়েছেন হিউস্টনভিত্তিক মেডিকেল রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট ফার্ম ‘মেডিস্টার’র সিইও মঞ্জের হোরানী। রবিবারের ফিজিক্স জার্ণালে আশাব্যঞ্জক সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকরা মনে করছেন, ভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে সংক্রমিত হবার সময় কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এই ভাইরাস কোনভাবেই টিকতে পারে না ১৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের অধিক তাপমাত্রার মধ্যে। এজন্যেই এয়ার ফিল্টার তৈরী করা হয়েছে ৩৯২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের। যাতে স্বল্প সময়েই ভাইরাস নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণে রবিবার ‘দৈনিক নতুন রেকর্ড’ স্থাপন করলো ফ্লোরিডা। এদিন ১৫ হাজার ৩০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি জানায়।

এর আগে দৈনিক সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল নিউইয়র্কে (৪ এপ্রিল) ১২ হাজার ২৭৪। নিউইয়র্কে এখন ৬৭ হাজার জনের করোনা টেস্টে পজিটিভ রেজাল্ট আসছে মাত্র ১ শতাংশ। ফ্লোরিডার এমন পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুসারি রিপাবলিকান স্টেট গভর্ণর রন ডি সেন্টিসের গোয়ার্তুমিকে দায়ী করা হচ্ছে।

ফ্লোরিডার হাসপাতালে সিট ফুরিয়ে গেছে। আইসিইউ সংকট চলছে বলে জানা গেছে। এই স্টেটে ৪০ হাজারের অধিক বাংলাদেশী বাস করেন। তারা সবাই ভালো আছেন বলে রবিবার সন্ধ্যায় সেখানকার কমিউনিটি লিডার ও বাই-স্টেট চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আতিকুর রহমান জানিয়েছেন। তবে তিনি জানান, যেভাবে আক্রান্তের হার বাড়ছে তা কারো জন্যেই ভালো কোন সংবাদ নয়। স্বাস্থ্যবিধির পরিপন্থি নির্দেশনা অব্যাহত থাকায় এমন ভীতির মধ্যে বাস করতে হচ্ছে সকলকে।

উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে সাউথ ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির সংক্রমণ রোগ-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন টনি বলেন, হাসপাতালে ঠাঁই নেই। চিকিৎসক-নার্সরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যেই রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। অধ্যাপক টনি উল্লেখ করেন, মার্চ-এপ্রিলে নিউইয়র্কের ভয়ংকর পরিস্থিতি এখন ফ্লোরিডায় বিরাজ করছে।

এমন পরিস্থিতি সত্বেও স্টেট গভর্ণরের নির্দেশে ওরল্যান্ডোতে ডিজনী ওয়ার্ল্ড খুলে দেয়া হয়েছে। ডিজনী থিম পার্কের চেয়ারম্যান বলেছেন, আমাদের চারপাশের পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমরা নিরাপদে এবং দায়িত্বশীলভাবে সবকিছু চালাতে পারবো।

Scroll to Top