পৃথিবীজুড়ে করোনাভাইরাসের দাপট। মহাকাশে অবশ্য তার বালাই নেই। তাই সেখানে এতদিন দিব্যি ছিলেন সকলে। প্রায় এক বছর পর ফিরলেন তিন নভোচারী, তবে ভিন্ন এক পৃথিবীতে। ২০১৯সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে যাওয়া ওই তিন নভোচারী যে পৃথিবী ছেড়ে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে সেই পৃথিবীর আমূল পরিবর্তন দেখতে পান তারা।
মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে তিন জন গতকাল শুক্রবার পৃথিবীতে ফিরেছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস পৃথিবীতে ফিরে আসা এই নভোচারীদের স্বাভাবিক রুটিনেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। মহাকাশে থাকা অবস্থায় এক ভিডিও কলে জেসিকা মায়ার সাংবাদিকদের বলেন, নিচের পৃথিবীতে এরকম কিছু একটা যে ঘটছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে সেটা একটা পরাবাস্তব ব্যাপার বলে মনে হয়। কারণ এখান থেকে পৃথিবীটা আগের মতোই অপূর্ব লাগে। পৃথিবীতে ফিরে এলেও পরিবার বা বন্ধুদের কাউকে যে আলিঙ্গন করতে পারব না, সেটা ভাবতেই পারিনি। জেসিকা মায়ার গত বছর মানুষের মহাকাশ অভিযানে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেন আরেক নারী নভোচারী ক্রিস্টিনা কোচের সঙ্গে মিলে ‘স্পেস ওয়াক’ অর্থাৎ মহাকাশে হেঁটে
কিন্তু তাদের কেন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে অথবা COVID-19 পরীক্ষা হবে? তারা তো পৃথিবীর বাইরে ছিলেন, যেখানে ভাইরাসের সংক্রমণের নামগন্ধও ছিল না। তাহলে কেন? রাশিয়ান স্পেস এজেন্সি রসকসমস সূত্রের খবর, স্পেস করপোরেশনে কর্মরত অন্তত ৫০ জনের শরীরে মিলেছে করোনার জীবাণু। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পৃথিবীতে ফেরা নভোচরদের রাখা হবে কোয়ারেন্টাইনে। আর আমেরিকায় তো প্রবল দাপট করোনার। ফলে অন্য পরিবেশ থেকে ফিরেই যদি এই মহাকাশচারীরা আক্রান্ত হন, তাই জেসিকা এবং অ্যান্ড্রুকেও একমাস আলাদা রাখা হবে।
মেয়ারের কথায়, “পৃথিবীর এমন আকস্মিক পরিবর্তন দেখে আমরা চমকে গেছি। তবু বলি, মহাকাশ থেকে পৃথিবী এখনও ততটাই সুন্দর দেখতে লাগছে। বোঝার উপায়ই নেই যে একটা মহামারীতে কাঁপছে আমাদের গ্রহ।” তবে মহাশূন্যে ভেসে থাকার পর কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডও তারা উপভোগ করবেন বলেই মনে করছেন নাসার দুই নভোচারী।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সার্চ টিমের সদস্যরা নভোচারীদের উদ্ধার করে সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দরে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদের বিমানে করে যার যার দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।