বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হলেও গাড়ি এখনো নিম্ন-মধ্যবিত্তের ক্রয়সীমার বাইরে। নতুন গাড়ি কেনার জন্য যে পরিমান নগদ অর্থের প্রয়োজন, সেই পরিমান অর্থ অনেক পরিবারের কর্তাদের জন্য সংগ্রহ করা কঠিন। নিম্নমধ্যবিত্তের গাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ করতে এগিয়ে এলো পিএইচপি অটোমোবাইল লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাজারে নিয়ে এলো ২০১৮ মডেলের নতুন একটি গাড়ি।
গাড়িটির মডেল প্রোটন সাগা ২০১৮। প্রতিদিন মাত্র ১১৯৯ টাকা কিস্তি পরিশোধ করে যে কেউ হতে পারেন এই গাড়িটির গর্বিত মালিক। জাপানের স্বনামধন্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতশুবিশির সঙ্গে মালয়েশিয়ার অটোমোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রোটন যৌথভাবে এই গাড়িটি নির্মাণ করেছে।
প্রোটন সাগা ২০১৮ গাড়িতে রয়েছে ৪ সিলিন্ডার বিশিষ্ট ১৩৩২ সিসির ভিভিটি ইঞ্জিন, ৫ গিয়ারের সিভিটি (কন্টিনিউয়াসলি ভেরিয়েবল ট্রান্সমিশন) অটোমেটিক ট্রান্সমিশন গিয়ারবক্স, মাল্টি পয়েন্ট ইনজেকশন ফুয়েল সিস্টেম, ইবিডি এবং ব্রেকিং এর জন্য এবিএস রয়েছে।
গাড়িটির বোর এবং স্ট্রোক যথাক্রমে ৭৬ * ৭৩.৪। গাড়িটির সর্বোচ্চ অর্শ্ব শক্তি ৫৭৫০ আর পি এমে ৯৪ এইচপি। তৃতীয় প্রজন্মের এই গাড়িটি প্রতি লিটার তেলে ১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম। সিটি রাইডে ১২ কিলোমিটারের কম বেশি হতে পারে। এই গাড়িটিতে ১৫ ইঞ্চি অ্যালয় হুইল ব্যবহার করা হয়েছে।
গাড়িটির রিয়ার ভিউ মিররে ব্যাক ক্যামেরা রয়েছে। মাল্টিমিডিয়া প্লেয়ারে রয়েছে এমপিথ্রি, এফএম, ব্লুটুথ এবং ইউএসবি কানেকটিভিটি।মাল্টিমিডিয়া স্টিয়ারিং কন্ট্রোলের মাধ্যমে গাড়িটির মিউজিক সিস্টেম কন্ট্রোলসহ ফোন রিসিভ করার অপশন রয়েছে। গাড়িটিতে হাইড্রলিক পাওয়ার স্টিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে।
সাগা প্রিমিয়ামে রয়েছে দুইটি ইউএসবি চার্জার পোর্ট যা সহজেই মোবাইল চার্জ দেয়া যাবে। গাড়িটির পেছনের সিটে চিলড্রেন সিট যোগ করার অপশন রয়েছে। ২০১৮ মডেলের এই গাড়ির বুট স্পেস ৪২০ লিটার। চালক এবং প্রথম সিটের যাত্রীর জন্য এতে দুইটি এয়ারবেগ রয়েছে।
গাড়িটিতে ট্রাকশন কন্ট্রোল এবং হিল এসিস্ট অপশন রয়েছে যা দিয়ে পাহাড়ে ভ্রমণ করা যাবে নিশ্চিন্তে। সাগা প্রিমিয়াম ২০১৮ এর ওজন ১৪৮৫ কেজি। ৪৩৩১ মিলিমিটার (মি.মি.) দৈর্ঘ্য, ১৬৮৯ মিমি প্রস্থ এবং ১৪৯১ মিলিমিটার উচ্চতার এই গাড়িটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৫০ মিলিমিটার।
পিএইচপি অটোমোবাইল লিমিটেডের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা এস এম শাহিনুর রহমান ‘আমরা গাড়ি কেনার প্রক্রিয়াকে সহজ করেছি। মধ্যবিত্তের ক্রয় সীমার নাগালে মাত্র ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট করে সহজেই এই গাড়িটি কেনা যাবে। দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক যেকোন কিস্তিতে গাড়িটির বাকি মূল্য ৩ বছরে বিনা সুদে পরিশোধের সুযোগ থাকছে।’
তিনি আরো বলেন, প্রোটন সাগা প্রিমিয়াম ২০১৮ মডেলের গাড়িটি কিনলে ক্রেতারা পাঁচটি ফ্রি সার্ভিস পাচ্ছেন। গাড়িটিতে ৩০ হাজার কিলোমিটার বা ৩ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা রয়েছে। চট্টগ্রামে নিজস্ব সার্ভিস সেন্টার এবং সারা দেশে রহিম আফরোজের মাধ্যমে ক্রেতাদের গাড়ির বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করা হবে।
প্রোটন সাগা প্রিমিয়ামের টার্নিং রেডিয়াস ৫.১ মিটার। যার কারণে স্বল্প জায়গাতে সহজেই গাড়িটি ঘোরানো যাবে। গাড়িটির সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। পুশ স্টার্টসহ গাড়িটির বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিচার রয়েছে। এতে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, হ্যালোজেন হেড ল্যাম্প, সামনে এবং পিছনে ফগ ল্যাম্প, সেন্সর, ৬টি বোতল এবং কাপ হোল্ডার, ৪টি স্পিকারসহ পিছনের সিটকে ফোল্ড করে মালামাল নেয়ার সুবিধা রয়েছে।
প্রতিটি গাড়ির সীমাবদ্ধতা থাকে। সে হিসেবে নতুন এই ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটির সামনে এবং পিছনে হ্যান্ডরেস্ট নেই। গাড়িটির লেগরুম প্রশস্ত থাকলেও হেডরুম অতটা আরামদায়ক নয়। নতুন গাড়িগুলোতে এএমটি গিয়ার সিস্টেম নেই।
সিট কভারে ফেব্রিক্স ব্যবহার করা হয়েছে। ডিসপ্লে বোর্ডে গাড়ি সম্পর্কিত সব ধরণের তথ্য প্রদর্শন করে না। গাড়িটির মাল্টিমিডিয়া অংশে কোন ডিভিডি প্লেয়ার বা ডিসপ্লে সংযোজিত নেই।
গাড়িটির বাজার মূল্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সহজ কিস্তিতে গাড়ি কেনার অফারে কেমন সাড়া পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ বলেন, মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করে আমরা এই গাড়িটি বাংলাদেশের বাজারজাত করেছি। পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেড বাংলাদেশে সিকেডি খুলেছে।
এখন দেশেই বিশ্বমানের গাড়িগুলো এসেম্বল করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ গাড়ি শিল্পে নিজেদের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। প্রোটন সাগা প্রিমিয়াম ২০১৮ ক্রেতাদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।
শুধু চট্টগ্রামে আমরা ৩৫ টিরও বেশি ইউনিট বিক্রি করেছি। প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গাড়িটি সম্পর্কে আমরা প্রচুর জানার আগ্রহ দেখছি। আশা করা যায়, ব্র্যান্ড নিউ এই গাড়িটি গ্রাহকদের মধ্যে সারা ফেলবে।