লোডশেডিংয়ে জামালগঞ্জে হাতপাখার কদর বেড়েছে

লোডশেডিংয়ে জামালগঞ্জে হাতপাখার কদর বেড়েছে
হাতপাখা তৈরির কাজে ব্যস্ত এক নারী - সংগৃহীত ছবি

তীব্র গরম আর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জামালগঞ্জে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আর বিদ্যুতের লোডশেডিং মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। দিনে রাতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মানুষ হাফিয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিনে বিদ্যুতের এমন লোকোচুরিতে অতিষ্ঠ জামালগঞ্জসহ ইউনিয়নের মানুষ।

প্রচন্ড গরম আর অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সাধারন মানুষ একটু শান্তির পরশ নিতে খুজছেন প্রকৃতির ছায়া। তাতেও শান্তি নেই। গরম থেকে অবিরাম ঝড়ছে ঘাম। এমনি গরমে শরীরে কখনো ঘাম শুকাচ্ছে, আবার কখনও ঝড়ছে। একদিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং অন্যদিকে প্রচন্ড গরম। এমন পরিস্থিতি থেকে বাচতে মানুষ এখন ভরসা করছেন হাতপাখার উপর। গরমের হাত থেকে বাচতে পাখা কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। এমন গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হাত পাখার চাহিদা। মধ্যবিত্তের কাছে হাত পাখাটাই এখন স্বর্গসুখ।

সাচনা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, হাতপাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু সাচনা বাজারেই নয় বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজার গুলোতে হাত পাখার দোকানে এখন উপচে পড়া ভীড়। বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের রং-বেরং এর হাতপাখা। এমন অবস্থায় সর্বত্র কদর বেড়েছে হাতপাখার। চাহিদা বাড়ায় দাম ও বেড়েছে হাতপাখার। বছরের এসময় পাখার চাহিদা থাকে। চৈত্র থেকে শুরু করে জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত বিক্রির মৌসুম হলেও চৈত্র ও বৈশাখ মাসেই পাখা বিক্রির উপযুক্ত সময়। কিন্তু এবার জৈষ্ঠ মাসে ব্যপক গরম হওয়ায় চাহিদা বাড়ছে হাতপাখার।

জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার, মন্নান ঘাট বাজার, নোয়াগাও বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে হাত পাখা বিক্রির ধুম চলছে। শুধু উপজোর বাজার নয় বিভিন্ন গ্রামে ব্যবসায়ীরা হাতপাখা বিক্রির করছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাশ বেতের কারীগন ও নারীরা পাখা তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

ভীমখালী ইউনিয়নের বিছনা মির্জাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নুরহেনা নামের এক নারী হাতপাখা তৈরি করছেন। সে তিনি জানান আগেও হাত পাখা তৈরি করতাম। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিং ও তাপমাত্রার কারণে প্রতিদিন আমার কাছে লোকজন আসছে। তাই আগে প্রতিদিন ৪-৫টি পাখা তৈরি করতাম। এখন প্রতিদিন ৮-১০টি হাত পাখা তৈরি করছি। এই পাখা তৈরিতে আমার মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে ও স্বামী সহায়তা করছে। প্রতিটি পাখা ১০০ টাকা করে বিক্রি করি। এতে আমার প্রতি পাখায় ৮০ টাকার উপড়ে আয় হয়। প্রতিদিন আমি আর আমার মেয়ের আয় ৮০০ টাকা। ২০০ টাকার মতো বাঁশ বেত ও রংয়ে খরচ হয়।

নূর হেনার কাছে পাখা কিনতে আসা শেলিনা আক্তার বলেন, প্রচন্ড গরম আর রাত দিন বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার লুকোচুরির কারণে নুর হেনার পাখা তৈরি করে অনেক আয় করছে। প্রতিদিনই এলাকার লোকজন পাখা নিতে ভীড় করছেন। আমিও তার কাছ থেকে পাখা কিনেছি।