কঠোর লকডাউনে হঠাৎ করে উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের প্রধান শহর সিলেটে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার হার তুলনামূলক ভাবে কমেছে। গত সপ্তাহে সিলেটের দুটি ল্যাবের প্রতিটিতে দুই থেকে তিনশ’ নমুনা পরীক্ষা হতো।
কিন্তু লকডাউনের কারণে প্রতিটি ল্যাবে একশ’র কম নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করাতেও অনীহা কাজ করছে বলে অভিমত চিকিৎসকদের। এ অবস্থায় সিলেটের প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন মিলে সিভিল সার্জনের সঙ্গে সমন্বয় করে পাড়ায়-মহল্লার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এতে করে স্বাস্থ্যবিধিও মানা হবে এবং শনাক্তের আসল চিত্র বেরিয়ে আসবে।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, অনেকে করোনার উপসর্গ নিয়ে চলাচল করলেও অনীহার কারণে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। তাতে আরও বড় ক্ষতি ডেকে আনছেন তারা। আর লকডাউনের কারণে মফস্বলের লোকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ার আগ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার জন্য আসছেন না। ফলে পিসিআর ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ তুলনামূলক কম জমা পড়ছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে অসংখ্য মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন এবং সিভিল সার্জনের সঙ্গে সমন্বয় করে পাড়া-মহল্লায় ঘরে ঘরে করোনা পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এতে আসল চিত্র বেরিয়ে আসবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রক্রিয়া সহজ হবে।
এদিকে লকডাউনের চতুর্থ দিনে শনিবার (১৭ এপ্রিল) সিলেটের দু’টি ল্যাবে মাত্র ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে মাত্র ৯২টি নমুনার মধ্যে ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার নমুনা পরীক্ষার হার কম হলেও হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছেন আশঙ্কাজনক হারে। সেই সঙ্গে মৃত্যুর হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সিলেটে করোনার বিশেষায়িত হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। এ হাসপাতালে যে কয়েকটি শয্যা খালি আছে, তা কেবল করোনা পজিটিভ রোগীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সিলেটে করোনার বিশেষায়িত শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. চয়ন রায় বলেন, ১০০ শয্যার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৮৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। ১৪ জন আছেন আইসিইউতে। প্রতিদিন নতুন করে রোগী ভর্তির জন্য আসছেন। এ অবস্থায় শয্যা সংকটে অনেককে খাদিমনগর ৩১ শয্যার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।