রায়হানের আহমদের মৃত্যু: সেই রাতে কী ঘটেছিল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে?

পুলিশি নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছে তার পরিবার। পুলিশ এখন পর্যন্ত সেই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে সত্য-মিথ্যা কিছু বলেনি। শুধু ‘দায়িত্বে অবহেলা’র দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেছেন এসএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তাই সেই রাতে (শনিবার দিবাগত রাত) বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আসলে কী ঘটেছিল- তা এখনও অজানা। রায়হানকে সেই রাতে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সিলেট মহানগর পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করলেও পুলিশ কর্তৃক তাকে নির্যাতনের বিষয়টি সম্পর্কে মন্তব্য করতে নারাজ। তদন্তের স্বার্থে এ ফাঁড়ির আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলে ওই সূত্র জানায়।

এ প্রসঙ্গে এসএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ পিপিএম সোমবার বলেন, শনিবার দিবাগত রাতের কোনও এক সময় নগরীর কাষ্টঘর এলাকায় রায়হানকে ছিনতাইকারীরা মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত ৩টার দিকে রায়হানকে উদ্ধার করে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ওসমানী হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।

ফাঁড়ির আশপাশের সিসি ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ দেখে সত্য ঘটনা উদঘাটনের কোনও সুযোগ আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ক্যামেরাগুলোর ড্রাইভের পাসওয়ার্ড এখনও পাওয়া যায়নি। চেষ্টা চলছে, পাসওয়ার্ড পেলে সেই রাতের ভিডিও ফুটেজগুলো খতিয়ে দেখা হবে। তবে ফাঁড়ির ভেতরে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। তাই ভেতরের কোনও ফুটেজ পাওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদ নির্যাতনে মৃত্যুরবণ করেছেন। প্রথম থেকেই পরিবারের অভিযোগের তীর পুলিশের দিকে। এ ঘটনায় রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় রায়হান আহমদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার তান্নি বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তান্নি পুলিশের বিরুদ্ধে তার স্বামীকে নির্যাতন মেরে ফেলার অভিযোগ করেছেন।

রাহয়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে আরও তিন পুলিশ সদস্যকে। সোমবার বিকালে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।

রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার আড়াই মাসের এক মেয়ে রয়েছে। নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন তিনি।
:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Scroll to Top