মহামারী করোনাভাইরাস সিলেট বিভাগে তার ছোবল বসাচ্ছে জোরেশোরে। ইতিমধ্যে বিভাগের চার জেলায় আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ২০ জন। তন্মধ্যে সিলেট জেলায় ৪ জন, সুনামগঞ্জে ২ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন এবং হবিগঞ্জে ১৩ জন শনাক্ত হয়েছেন।
করোনা সিলেট বিভাগে ছড়িয়ে পড়লেও একটিমাত্র জেলাতে আছে ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ সুবিধা। সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় ভেন্টিলেটর দূরে থাক, কোনো আইসিইউ সুবিধাই নেই।
চিকিৎসকদের মতে, করোনাক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে আইসিইউতে রেখে ভেন্টিলেটরের সাহায্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে। শুরুতে এ হাসপাতালে কোনো আইসিইউ সুবিধা ছিল না। পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুটি ভেন্টিলেটর এনে এ হাসপাতালে আইসিইউ চালু করা হয়।
তবে মাত্র দুটি আইসিইউ কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়, এমন সমালোচনা শুরু হয় সিলেটে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে আরো ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ চালুর চাহিদা চেয়ে ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দেওয়া হয়। পরে গেল ৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদফতর ৯টি ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ শয্যা পাঠায়।
বর্তমানে এগুলো শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে প্রস্তুতের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। তিনি জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে এগুলোর কাজ শেষ হতে পারে।
সব মিলিয়ে সিলেটে করোনা রোগীদের জন্য ১১টি আইসিইউ হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত এটা নিশ্চিত। এর বাইরে বেসরকারি নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেখানে আরো কয়েকটি আইসিইউ পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নর্থইস্ট হাসপাতালে বর্তমানে ভেন্টিলেটরসহ ৪টি আইসিইউ আছে। এ হাসপাতাল সরকার অধিগ্রহণ করলে সেখানে আরো ৪টি আইসিইউ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সিলেটের স্বাস্থ্যখাতের কর্মকর্তাদের। ইতিমধ্যে এ হাসপাতাল অধিগ্রহণ করতে এর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায়ই শুধু করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ সুবিধা আছে। শামসুদ্দিনে আগের ২টি আর নতুন ৯টি মিলিয়ে ১১টি হচ্ছে। নর্থইস্ট হাসপাতালে আরো অন্তত ৮টা পাওয়ার আশা করছি আমরা। আর অন্য জেলায় কোনো রোগীদের জন্য আইসিইউ প্রয়োজন হলে তাকে সিলেটে নিয়ে আসা হবে। এক্ষেত্রে করোনা রোগীদের বহনের জন্য পৃথক অ্যাম্বুলেন্স আছে।’
তিনি জানান, সিলেট ছাড়া অন্য তিন জেলায় আক্রান্তদের রাখার জন্য সদর হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন ইউনিট আছে।
এদিকে, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় আইসিইউ সুবিধা শিগগিরই চালু হতে পারে, এমন সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আইসিইউ চালু করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাছাড়া লোকবলের অভাব আছে। আইসিইউ চালাতে অ্যানেস্থলজিস্ট লাগে, যা আমাদের কম আছে।