আর কয়েক মিনিট আগে হ্যাগলি ওভালের পাশের মসজিদে পৌঁছালেই শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে যেত তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমদের। হয়তো দেশের ক্রিকেটও মহাবিপর্যয়ে পড়তো। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গে থাকায় তার আগেই সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে যান মেহেদি হাসান মিরাজরা। যে কারণে তারা প্রাণে বেঁচে যান। এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি কখনও হতে হবে, এটা চিন্তাও করতে পারেনি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। তাইতো এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। যা সঙ্গী করেই শনিবার রাত ১০.৪০ মিনিটে ঢাকায় ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নেমেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বলেন ঐ ঘটনার পর নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তারা।
ক্রাইস্টচার্চের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বিশ্ব ক্রিকেট হতভম্ব। যা বেশি করে লেগেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। তাইতো শরিবার রাতে টাইগারদের স্বাগত জানাতে ও পাশে দাঁড়াতে হযরত শাহজালান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই ভীড় জমান। তাছাড়া অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এ রাতে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। যে কারণে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হিমশিম খান। এরমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাকে দেখেই বোঝা গেল নিউজিল্যান্ডের সন্ত্রাসী হামলায় কতটা ভেঙে পড়েছেন তিনি।
যে ঘটনা নিউজিল্যান্ডে ঘটেছে তা কারোয় কাম্য নয়। আর এমনটা হবে ভাবতেই পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ‘এ ঘটনা আসলে খুবই অনাকাংখিত। এটা কারোরই কাম্য নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমাদের দলের সবাই, সারারাত আমরা ঠিকমত ঘুমাতেও পারিনি। যখন রুমের মধ্যে ছিলাম, তখন শুধু একটা কথা চিন্তা হচ্ছিল, যে আমরা কতটুকু ভাগ্যবান। সবচেয়ে বড় কথা, নিউজিল্যান্ডের মত দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে- এটা খুব আনএক্সপেক্টেড।’
মাহমুদউল্লাহ আরো বলেন, ‘শুধু এতটুকু বলতে চাই, আমরা খুব ভাগ্যবান যে, এখন এখানে বসে আছি। আপনাদের সবার দোয়া, দেশবাসির দোয়া, বাবা-মা, পরিবার-পরিজন, আমরা আল্লাহর রহমতে এখানে এসে পৌঁছাতে পেরেছি। আমি এটা বর্ণনা করতে পারবো না যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি এখন। আমরা কি দেখেছি, এটা আসলে বিশ্বাস করার মত না।’
দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিসিবি সভাপতিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এখন তাদের একটাই লক্ষ্য দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে ফেরা। এজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। কেননা সামনেই বিশ্বকাপ। তার আগে রয়েছে টাইগারদের আয়ারল্যান্ড সফর, তারপর বোর্ডের সাথে আমাদের যোগাযোগ হলো, ওনারা তাড়াতাড়িই আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করলেন। এ জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ। পাপন ভাইকে বিশেষ ধন্যবাদ। কারণ ওনার সঙ্গে কথা হলো এবং উনি আমাদের আশ্বস্থ করলেন যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। একই সঙ্গে দেশবাসির কাছে আবেদন থাকবে, তারা যেন আমাদের জন্য সব সময় দোয়া করেন এবং এই মানসিক অবস্থা থেকে যেন আমরা তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসতে পারি।’