এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশের সিরিজ হার নিশ্চিত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটা ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই। কিন্তু এই লজ্জা এড়াতে পারলো না বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশের ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি সাব্বিরের সেঞ্চুরি। তার ওই লড়াকু সেঞ্চুরির পরও ৩৩১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করে ২৪২ রানের বেশি যেতে পারল না বাংলাদেশ। ৮৮ রানের বড় হারে নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো সফরকারিরা। সাব্বির তুলেছেন নিজের অভিষেক সেঞ্চুরি।
শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলীয় ২১ রানেই ওপেনার কলিন মুনরোকে ৮ রানে ফিরিয়ে দলকে সাফল্য এনে দেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। এরপর নিকোলসকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান মার্টিন গাপটিল। তবে টানা দুই সেঞ্চুরি করে এই ম্যাচে বেশিদূর যাননি গাপটিল। ২৯ রানেই তামিমের দুর্দান্ত ক্যাচে তাকে ফেরান সাইফউদ্দিন।
এরপর তৃতীয় উইকেটে নিকোলস ও টেলর গড়েন হাফসেঞ্চুরি পূরণ করা নিকোলসকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। কিউই ব্যাটসম্যান ৭৪ বলে করা তার ৬৪ রানের ইনিংসটি সাজান ৭ বাউন্ডারিতে। নিকোলাসের বিদায়ের পর টেলর ও ল্যাথামের ব্যাটে চতুর্থ উইকেটে আসে ৫৫ রান। রেকর্ড গড়া টেলরকে ফেরান রুবেল হোসেন। মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়ার আগে এই ব্যাটসম্যান ৮২ বলে করেন ৬৯ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হওয়া ল্যাথাম ৫১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৫৯ রান।
এরপর শুরু হয় নিশাম ও গ্র্যান্ডহোমের ঝড়। নিশাম ২৪ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় করেন ৩৭ রান। তার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন গ্র্যান্ডহোম, ১৫ বলে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৭ রানে। ঝড়ো ইনিংসটি তিনি সাজান ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। আর মিচেল স্যান্টনার ৯ বলে অপরাজিত থাকেন ১৬ রানে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে কিউইদের সংগ্রহ ৩৩০ রান।
কিউই ব্যাটসম্যানদের দাপটের দিনে ৯৩ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েচেন মোস্তাফিজ। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি, সাইফউদ্দিন, মিরাজ ও রুবেল হোসেন।
৩৩১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। প্রথম ৩ ওভারেই ফিরে যান তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। টিম সাউদির আগুনে গোলার সামনে তামিম টিকতে পারেন কেবল ২ বল। শূন্য রানেই লাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ওপেনার। এক বল পর ফেরেন সৌম্যও। তার ব্যাট থেকেও আসেনি কোনো রান।
২.১ ওভারে সাউদিকে তৃতীয় উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন লিটন। তার ব্যাট থেকে আসে এক রান। বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ভরসা মুশফিকুর রহিম কিছুটা সময় চেষ্টা করেও খুব বেশি দূর যেতে পারেননি। ২৭ বলে ১৭ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হন তিনি।
দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশকে কিছুটা স্থির করেছেন সাব্বির ও সাইফউদ্দিন। কিন্তু সে জুটিও ভেঙে যায়। সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। ব্যক্তিগত ৪৪ রানে বোল্টের বলে আউটন হন সাইফ। এরপর দ্রুতই ফেরেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
অষ্টম উইকেটে মিরাজকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। দলীয় ২৩৭ রানে রানে মিরাজ (৩৭) আউট হওয়ার পর আর মাত্র ৫ রান যোগ করে বাকি দু্টি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে টিম সাউদি একাই নেন ৬ উইকেট। ট্রেন্ট বোল্ট ২টি আর কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম নেন ১টি উইকেট।
৮৮ রানের বড় হারে নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো সফরকারিরা।