বিপিএলের ১১তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় খুলনা টাইটান্স এবং চিটাগং ভাইকিংস। মুশফিকের ভাইকিংসের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে মাহমুদউল্লাহর টাইটান্স তুলেছিল ১৫১ রান। জয়ের জন্য ভাইকিংসদের এই স্কোর টপকে যেতে হতো। তবে, ৮ উইকেট হারানো ভাইকিংসের ইনিংস থেমে যায় ১৫১ রানের মাথায়। তাতে, টাইটান্স-ভাইকিংস ম্যাচ টাই হলে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে, এক উইকেট হারিয়ে ভাইকিংস তোলে ১১ রান। ২ উইকেট হারানো খুলনা তোলে ১০ রান। সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় মুশফিকের ভাইকিংস।
খুলনার হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন আইরিশ তারকা পল স্টার্লিং এবং জুনায়েদ সিদ্দীকি। স্টার্লিং ১০ বলে ১৮ আর জুনায়েদ ১৫ বলে করেন ২০ রান। তিন নম্বরে নামা ডেভিড মালান ৪৩ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৪৫ রান। দলপতি মাহমুদউল্লাহ ৩১ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ৩৩ রান। কার্লোস ব্রাথওয়েইট ইনজুরি থেকে ফিরে করেন ৫ বলে ১২ রান। নাজমুল হোসেন শান্ত ৬, আরিফুল হক ৯* আর অভিষিক্ত মাহিদুল অঙ্কন ৪* রান করেন।
ভাইকিংসের পেসার রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। সানজামুল ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে দুটি, নাঈম হাসান ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে একটি, খালেদ আহমেদ ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে একটি আর আবু জায়েদ ৩ ওভারে ২৯ রান দিয়ে একটি উইকেট তুলে নেন।
১৫২ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন ভাইকিংসের আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ এবং ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। শাহজাদ ১০ আর ডেলপোর্ট ১৭ রানে বিদায় নেন। তিন নম্বরে নামা ইয়াসির আলি খেলেন ৩৪ বলে দুটি চার আর দুটি ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংস। দলপতি মুশফিক ২৬ বলে একটি বাউন্ডারি আর দুটি ওভার বাউন্ডারিতে করেন ৩৪ রান।
সিকান্দার রাজা ০, মোসাদ্দেক হোসেন ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। শেষ ওভারে ১৯ রানের দরকার হয় ভাইকিংসদের। বোলার ছিলেন আরিফুল হক। প্রথম বলে নাঈম হাসান কোনো রান নিতে পারেননি। দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকান তিনি। তৃতীয় বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেওয়ার আগে নাঈম করেন ৮ রান। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকান রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক। পঞ্চম বলেও ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ বলেও অপেক্ষায় থাকেন তিনি। শেষ বলে এক রান দরকার ছিল ভাইকিংসের। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফ্রাইলিঙ্ক আরিফুলের শেষ ডেলিভারিটি ব্যাটেই লাগাতে পারেননি, এমনকি উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে বল জমা হলেও জয়ের জন্য সিঙ্গেল রানটি নিতে যেন দৌড় দিতেই ভুলে যান। পরে দৌড় দিলেও নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে পৌঁছানের আগেই রান আউট হন ১৩ বলে ২৩ রান করা ফ্রাইলিঙ্ক। ৮ উইকেট হারিয়ে টাইটান্সের সমান ১৫১ রান করে ভাইকিংস। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
খুলনায় যোগ দেওয়া পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ খান ৪ ওভারে ২৪ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। ক্যারিবীয়ান তারকা কার্লোস ব্রাথওয়েইট ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে নেন দুটি উইকেট। তাইজুল ইসলাম ৪ ওভারে ২৩ রানের বিনিময়ে নেন একটি উইকেট। আরিফুল হক শেষ ওভারটি করে ১৮ রান দিয়ে পান একটি উইকেট।
বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম সুপার ওভারে ম্যাচ গড়ায়। খুলনার পেসার জুনায়েদ খানের হাতে বল তুলে দেন টাইটান্স দলপতি মাহমুদউল্লাহ। প্রথম বলে ভাইকিংসের ব্যাটসম্যান ক্যামেরুন ডেলপোর্ট বাউন্ডারি হাঁকান। দ্বিতীয় বলে নেন সিঙ্গেল রান। তৃতীয় বলে ফ্রাইলিঙ্ক চার মারেন। চতুর্থ বলে আউট হন তিনি। পঞ্চম বলে মুশফিক সিঙ্গেল নেন। জুনায়েদের শেষ বলে সিঙ্গেল নেন ডেলপোর্ট। সুপার ওভারে ভাইকিংসরা তোলে ১১/১।
সুপার ওভারে ১২ রানের টার্গেট পায় টাইটান্স। বোলিংয়ে আসেন ফ্রাইলিঙ্ক, ব্যাটিংয়ে নামেন কার্লোস ব্রাথওয়েইট এবং ডেভিড মালান। প্রথম বলে ব্রাথওয়েইট সিঙ্গেল নেন। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি পান মালান। তৃতীয় বলে ডাবল নেন তিনি। চতুর্থ বলে রানআউট হন ব্রাথওয়েইট। পঞ্চম বলে ডাবল রান নেন পল স্টার্লিং। শেষ বলে খুলনার জয়ের জন্য দরকার হয় ৩ রান। লেগ-বাইয়ে আসে ১ রান, ডাবল নিতে গিয়ে রানআউট হন স্টার্লিং। তাতে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১০/২। সুপার ওভারের ম্যাচে জয় তুলে নেয় মুশফিকের ভাইকিংস।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস