অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের আরেকটি শিক্ষার সফর শেষ হতে চলেছে। ১৯৮৪ সাল থেকে স্বপ্নের অলিম্পিকে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে। শুরুতে বলা হয়েছিল দুনিয়া সেরা গেমসে পদক জিততে হলে আগে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হবে। দক্ষ কোচের মাধ্যমে অনুশীলন ও পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। লস অ্যাঞ্জেলসের পর প্যারিস। সব মিলিয়ে ৪৪ বছরে বাংলাদেশ ১১টি গেমসে অংশ নিয়েছে। এ দীর্ঘ সময়েও অভিজ্ঞতা বা শিক্ষার শেষ নেই। যদিও প্যারিস অলিম্পিকে এখনো বাংলাদেশের মিশন শেষ হয়নি। ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল মেয়েদের সাঁতারে বাছাইপর্বে আজ পুলে নামবেন সোনিয়া আক্তার। তিনিও যে পদক জেতার লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারবেন না তা নিশ্চিত। অবস্থান কত নিচের দিকে থাকে সেটাই মুখ্য।
পুরুষ অ্যাথলেটিকসে সেরা ইভেন্ট ১০০ মিটার দৌড়ে হিটে নামার অপেক্ষায় বাংলাদেশের ইমরানুর রহমান। দেশসেরা অ্যাথলেট তিনিই। জাতীয় প্রতিযোগিতায় দুবার দ্রুততম মানবের খ্যাতি পেয়েছেন। ইমরান যে উঁচুমানের অ্যাথলেট এ নিয়ে সন্দেহ নেই। লন্ডনে তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নিজ উদ্যোগে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক ইনডোর গেমসে সোনা জেতারও কৃতিত্ব রয়েছে। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করায় অলিম্পিক অল্প হলেও তাকে ঘিরে ভালো কিছুর আশা রয়েছে। অবশ্য তা পদক জয়ের জন্য নয়। হিটে কততম হবেন সেটাই মুখ্য। সোনিয়া বা ইমরানুর হিট পেরিয়ে যদি পদক জেতার লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে পারেন তা হবে বড় চমক। আর পদক পেলে তা হবে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য ঘটনা। এর আগে আমেরিকান প্রবাসী জিমন্যাস্ট সাইফ সিজারকে ঘিরে আশা ছিল। তার পেছনে বড় অঙ্কের অর্থও ব্যয় হয়েছিল। অথচ অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে সুপার ফ্লপ ছিলেন।
শুটিংয়ে রবিউল ইসলাম, সাঁতারে সামিউল ইসলাম রাফি, আর্চারিতে সাগর ইসলাম আগেই বিদায় নিয়েছেন। তারপরও সাগর পদক জেতার লড়াইয়ে নেমেছিলেন। রবিউল ও সামিউল তো শুরুর আগেই শেষ। সোনিয়ারও একই পরিণতি ঘটার শঙ্কা বেশি। দৃষ্টিটা থাকবে ইমরানুরের দিকে। ১০০ মিটারের দৌড়ে কত বিখ্যাত অ্যাথলেটদের চেহারা চোখে ভাসে। সেই ইভেন্টে ইমরানুর নামছেন। সাগরকে ঘিরেও আশা ছিল, কিন্তু বিখ্যাত আর্চারের সামনে সুবিধা করতে না পেরে বিদায় নিয়েছেন।
বাংলাদেশের অলিম্পিক শেষ হয়ে যাচ্ছে আজ। চার বছর পর আরেকটি অলিম্পিক আসবে। সরাসরি বা ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে হোক বাংলাদেশের প্রতিযোগীরাও অংশ নেবেন। দৃশ্য তো একই থেকে যাবে, ৪৪ বছরেও শিক্ষানবিশ থেকে বের না হলে। কবে আর হবে?
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবারই বলে অলিম্পিকে সাফল্য পেতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। বাস্তবে তাতো দেখা মিলছেই না বরং দিন দিন হতাশা বেড়েই চলেছে। সাফ গেমস ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো লক্ষ্য নেই।