নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ২টিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পেরেই হেরেছে বাংলাদেশ। নেলসনে হওয়া তৃতীয় ম্যাচটি ছিল তাই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। এমন ম্যাচে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ তো এড়ালোই, সেটিও নানা রেকর্ড গড়ে।
এই ম্যাচের আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনোই তাদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯ উইকেট ও ২০৯ বল হাতে রেখে এবার এলো ঐতিহাসিক প্রথম জয়। ১৯তম ম্যাচে এসে নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে হারাল বাংলাদেশ।
কিউইদের মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেট আর ২০৯ বল হাতে রেখে জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এতে সফরকারীরা তিন ম্যাচ সিরিজ শেষ করেছে ২-১ ব্যবধানে হেরে।
ছোট রান তাড়ায় সৌম্য সরকার আর এনামুল হক বিজয় আত্মবিশ্বাসী শুরু করেন। তবে তারা ১৫ রান তোলার পর সৌম্যকে ফিরতে হয় চোখে কিছু একটা পড়ে সমস্যা হওয়ায়। ৪ রান করে উঠে যান সৌম্য।
এরপর মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন বিজয় আর নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫০ বলের জুটিতে ৬৯ রান তুলে তারা জয় বলতে গেলে নিশ্চিত করে ফেলেন। জয় থেকে ১৫ রান দূরে থাকতে খোঁচা মেরে উইকেট রক্ষককে ক্যাচ দিয়ে আসেন বিজয়। ৩৩ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।
অধিনায়ক শান্ত জয়সূচক রান নেওয়ার পাশাপাশি ফিফটিও পূরণ করেন। ৪২ বলে ৮ চারের সাহায্যে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১ রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন দাস।
নেপিয়ারে সিরিজের শেষ ম্যাচে টসে জয় পান বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। টসে জিতে তিনি নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। এ দিন নিউজিল্যান্ড একাদশে কোনো পরিবর্তন না আনলেও; বাংলাদেশ একটি পরিবর্তন আনে। পেসার হাসান মাহমুদের জায়গায় একাদশে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রথমে বোলিংয়ে নামা টাইগার পেসাররা শুরুতেই নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরেন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৭ রান তুলতে সমর্থ হয় তারা। ওই দুটি উইকেটই তুলে নেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তিনি ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে ৮ রানে সাজঘরে পাঠান। এরপর ওয়ান ডাউনে নামা হেনরি নিকলসকে মাত্র ১ রানে আউট করে দেন তিনি।
সাকিবের পর ম্যাচের ১৭তম ওভারে নিজের প্রথম উইকেটটি পান অপর পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি টম লাথামকে ২১ রানে আউট করে দেন। এরপর ১৯ তম ওভারে ওপেনার উইল ইয়ংকে ২৫ রানে এবং ২১তম ওভারে মার্ক চ্যাপম্যানকে মাত্র ২ রানে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান।
শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নেওয়া সাকিব ম্যাচের ২৩তম ওভারে টম ব্লান্ডেলকে ৪ রানে আউট করে দেন। এতে করে ২৩ ওভার খেলে মাত্র ৭০ রান তুলতেই ছয়টি উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। এরপর ৮৫ রানের মাথায় পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার জস ক্লার্কসনকে (১৬) আউট করে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটান।
দিশেহারা নিউজিল্যান্ডের অষ্টম উইকেটের পতনও ঘটান সৌম। তিনি ২৯তম ওভারে দলীয় ৮৬ রানের মাথায় অ্যাডাম মিলনেকে (৪) সরাসরি বোল্ড আউট করেন। ৩১ তম ওভারে সেই সৌম্যই অদিত্য অশোককে (১০) আউট করে বাংলাদেশকে নবম ব্রেকথ্রু এনে দেন। তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ছিল ৯৭ রান।
আর মাত্র এক রান তুলতেই উইলিয়ামকে (১) আউট করে কিউইদের ইনিংস থামিয়ে দেন মোস্তাফিজ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ওপেনার উইল ইয়ং।