নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা

বিশ্বকাপের ৩২তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে রান রেটে এগিয়ে থেকে স্বাগতিক ভারতকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করলো প্রোটিয়ারা।

এর আগে বুধবার (১ নভেম্বর) পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক টম লাথাম। ব্যাট করতে নেমে কুইন্টন ডি কক ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের জোড়া সেঞ্চুরি এবং ইনিংসের শেষ দিকে ডেভিড মিলারের তাণ্ডবে ব্লাকক্যাপসের সামনে ৩৫৭ রানের বড় লক্ষ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে খানিকটা সাবধানী শুরু করেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক। টেম্বা বাভুমা আক্রমণাত্বক খেলার চেষ্টা করলেও ডি কক দেখেশুনেই ব্যাটিং করেন। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে জুটি বড় করতে পারেননি তারা। ইনিংসের নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। টেন্ট্র বোল্টের লেন্থ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন বাভুমা। এজ হয়ে বল স্লিপে থাকা ড্যারিল মিচেলের হাতে গেলে ফিরে যেতে হয় তাকে। সাউথ আফ্রিকার অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।

তিনে নামা ডুসেনকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন ডি কক। তারা দু’জনে মিলে দারুণ জুটিও গড়ে তোলেন। ২০.১ ওভারে দলের শতরান পূরণ করে প্রোটিয়ারা। সেই ওভারে ৬২ বলে হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ডি কক। আরেক ব্যাটার ডাসেন হাফ সেঞ্চুরি পান ৬১ বলে। এরপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান এই দুই ব্যাটার। মারমুখি ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। ২০০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ২৩৮ রানে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৬ বলে ১১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান ডি কক।

এরপর উইকেটে আসা ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ডুসেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তিনিও সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। সেঞ্চুরির পরও মারমুখি ব্যাটিং চালিয়ে যান ডুসেন। মিলারও চড়াও হন কিউই বোলারদের ওপর। তবে দলীয় ৩১৬ রানে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ১১৮ বলে ১৩৩ রান করে আউট হন ডুসেন। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসা হেনরিখ ক্লাসেনকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মিলার।

ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন মিলার। এরপরেই ৩০ বলে ৫৩ রান করে আউট হন মিলার। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা।

৩৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ডেভন কনওয়েকে হারিয়ে ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। ব্যক্তিগত ২ রান করে মার্কো ইয়ানসেনের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ব্যক্তিগত ৯ রানে আবারও ইয়ানসেনের শিকার হন রাচিন রবীন্দ্র। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা নিউজিল্যান্ড ইনিংসের এগারোতম ওভারে দলের আরেক ওপেনারকে হারায়। ব্যক্তিগত ৩৩ রান করে জেরাল্ড কোয়েৎজির শিকার হন উইল ইয়াং।

এরপরে আর কোনো ব্যাটার প্রোটিয়াদের হাল ধরতে পারেননি। ধারাবাহিকভাবে আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিল ব্যাটাররা। ড্যারিল মিচেল ২৪ রান করে শিকার হন কেশব মহারাজের। অধিনায়ক টম ল্যাথাম করেন মাত্র ৪ রান। মিচেল স্যান্টনার ও টিম সাউদি দুজনেই ব্যক্তিগত ৭ রান করেন।

এরপরে ব্যাটিংয়ে নেমে শূন্য রানে ফিরে যান জিমি নিশাম। সবশেষে ব্যাটে নামা ট্রেন্ট বোল্ড আউট হন ব্যক্তিগত ৯ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাট হেনরিকে নিয়ে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে গেছেন গ্লেন ফিলিপস। প্রোটিয়াদের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন তিনি।

ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন টিম সাউদি। এছাড়াও, ১টি করে উইকেট পান জিমি নিশাম ও ট্রেন্ট বোল্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন কেশব মহারাজ। মার্কো ইয়ানসেন নিয়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। জেরাল্ড কোয়েৎজি নিয়েছেন দুইটি উইকেট। বাকি একটি উইকেট নিয়েছেন কাগিসো রাবাদা।

Scroll to Top