উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে হারল মুস্তাফিজের দিল্লি ক্যাপিটালস

মুস্তাফিজের দারুণ এক ডেলিভারি ঠিকমতো খেলতে পারলেন না রোহিত শর্মা। মুম্বাই অধিনায়কের ব্যাটের কানায় ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। বেশ খানিকটা দূর দিয়ে যাওয়া বল প্রায় পাখির মতো ছোঁ মেরে তালুবন্দী করেন উইকেটরক্ষক অভিষেক পোড়েল। ম্যাচে ফেরে দিল্লি। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শেষ বলে গিয়ে জয় নিশ্চিত করে মুম্বাই। আসরে তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের মুখ দেখল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই। অন্যদিকে এ নিয়ে টানা চার হার দিল্লির।

চতুর্থ ম্যাচে এসে দিল্লি ক্যাপিটালসের একাদশে সুযোগ পেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। শুরুটাও করেছিলেন বাজেভাবে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে ইশান কিষানের হাতে টানা তিন চারের মার। প্রথম ওভারে দেন ১৩ রান।

তারপর আবারো বোলিংয়ে আসেন ১৫তম ওভারে। তবে এবার ঘুরে দাঁড়ালেন দারুণভাবে। দিলেন মোটে ২ রান। নিজের কোটার তৃতীয় ওভারে দুই চার হজম করলেও ম্যাচটাই ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বিধ্বংসী হয়ে ওঠা রোহিতকে আউট করে। শেষ ১২ বলে মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ছিল ২০ রান। বল তুলে দেওয়া মুস্তাফিজের হাতে। শুরুটাও হলো দারুণ। প্রথম তিন বলে দিলেন মোটে তিন রান। তবে এরপরই খেই হারালেন। দুই ওভার বাউন্ডারি আদায় করলেন টিম ডেভিড আর গ্রিন।

শেষ ওভারে ৫ রান দূরে থাকা মুম্বাইয়ের জয় যখন সময়ের অপেক্ষা ভাবা হচ্ছিল, তখনি ম্যাচটা প্রায় ঘুরিয়েই দিচ্ছিলেন আফ্রিকান এনরিখ নর্কিয়া। শেষ পর্যন্ত ৫ রান তুলতে মুম্বাইয়ের খরচ করতে হয় সবকটি বল।

মঙ্গলবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান করেছিল ওয়ার্নার বাহিনী। জবাব দিতে নেমে রোহিতের ফর্মে ফেরার দিনে ৬ উইকেটের জয় পায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

৪৫ বলে ৬৫ রান করেন রোহিত শর্মা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ তিল বর্মার। তিনি করেন ২৯ বলে ৪১ রান। বল হাতে ১ উইকেট পেলেও বেশ খরুচে ছিলেন মুস্তাফিজ। দিয়েছেন ৩৮ রান।

এর আগে প্রথম ইনিংসে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। কিন্তু ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি পৃথ্বী শ। ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা এই ওপেনার কিছুতেই যেন নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন না। ১৫ রান করে পৃথ্বী বিদায় নিলে ভাঙ্গে ৩৩ রানের ওপেনিং জুটি।

এরপর মানিশ পান্ডেকে সঙ্গে নিয়ে পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ১৮ বলে ২৬ রানে থেমেছেন মানিশ। এই টপ অর্ডার ব্যাটার সাজঘরে ফেরার পরই পথ হারায় দিল্লি। ৭৬ রানে ২ উইকেট থেকে দলীয় শতক পূরণ করার আগেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারকে হারায় তারা। ইয়াশ ধুল কিংবা রভম্যান পাওয়েলের কেউই সুবিধা করতে পারেননি।

এরপর আরও একবার ম্যাচের দৃশ্যপটে পরিবর্তন। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে উইকেটে এসে ঝড় তুলেন অক্ষর প্যাটেল। একপ্রান্তে ওয়ার্নার ধীরগতির ইনিংস খেললেও অপর প্রান্তে প্রতিপক্ষ বোলারদের কচুকাটা করেছেন এই অলরাউন্ডার। তার ২৫ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে আবারও বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখে দিল্লি।

কিন্তু এই ব্যাটার সাজঘরে ফেরার পর আর কেউই তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। ফিনিশিংটা ঠিকমতো দিতে পারলে ২০০ রানের মাইলফলকে চোখ রাখতে পারতো দিল্লি। তবে ওয়ার্নার ৪৭ বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরার পর লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেটা আর হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান সংগ্রহ করে। যা মুম্বাইয়ের বিপক্ষে জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।