ইফতেখার ও সাকিবের ব্যাটিং নৈপুণ্যে টানা চতুর্থ জয় বরিশালের

পাকিস্তানী ইফতেখারের সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের হাফ-সেঞ্চুরিতে টানা চতুর্থ জয় পেয়েছে ফরচুন বরিশাল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ১৮তম ম্যাচে বরিশাল ৬৭ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্সকে। ৫ ম্যাচে ৪ জয় ও ১ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে আছে বরিশাল। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৫ ম্যাচে ২ জয় ও ৩ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানেই থাকলো রংপুর।

ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া ইফতেখারের ৪৫ বলে অপরাজিত ১০০ ও সাকিবের ৪৩ বলে অনবদ্য ৮৯ রানে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৮ রানের পাহাড় গড়ে বরিশাল। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকটে ১৭১ রান করে রংপুর।

আজ স্থানীয় জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক শোয়েব মালিক। বরিশালের ওপেনার এনামুল হক বিজয় বাউন্ডারি মেরে ইনিংস শুরু করেন।তবে পরের ১৯ বলে কোন বাউন্ডারি মারতে পারেননি বিজয় ও মেহেদি হাসান মিরাজ। চতুর্থ ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন বিজয় ও মিরাজ। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে পাকিস্তানী পেসার হারিস রউফের বলে আউট হন ৮ বলে ১৪ রান করা বিজয়।

একই ওভারের চতুর্থ বলে নতুন ব্যাটার আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরানকে খালি হাতে ফেরান রউফ। পেসার হাসান মাহমুদের করা পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারের প্রথম দুই বলেই ছক্কা মারেন মিরাজ। তবে পরের দুই ডেলিভারিতে বরিশাল শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন হাসান।
মিরাজকে ২৪ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে শূন্যতে বিদায় দেন হাসান। মিরাজ ২০ বল খেলে ৩টি ছয় মারেন।

৬ ওভার শেষে ৪৬ রানে ৪ উইকেট পতনের পর বরিশালের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব ও ইফতেখার। ১০ ওভার পর্যন্ত সাবধানে খেলেন তারা। স্পিনার শামীম হোসেনের করা ১৩তম ওভারে ৪টি ছক্কা মারেন ইফতেখার। পরের ওভারে চার মেরে ২৮ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন তিনি। ১৬তম ওভারে সাকিবের ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৯ রান উঠে। একই ওভারে জুটিতে শত রান পূর্ন করেন সাকিব-ইফতেখার। জুটিতে সেঞ্চুরি পেতে তারা বল খেলেছেন ৬১টি।

১৭তম ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে চলমান বিপিএলে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব। এজন্য ৩২ বল খেলেন তিনি। রবিউলের করা ১৮তম ওভারে ২২ রান তুলেন সাকিব-ইফতেখার। রউফের ১৯তম ওভারে তিনটি ছক্কায় ২৪ রান তুলেন ইফতেখার। ঐ ওভার শেষে ইফতেখারের রান ৮৯। মাহেদির করা শেষ ওভারের প্রথম বলে চার, দ্বিতীয় বলে ছয় ও তৃতীয় বলে ১ রান নিয়ে এবারের বিপিএলে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি তুলে নেন ইফতেখার। ৪৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি দেখা পান তিনি। ওভারের শেষ দুই বলে ছয় মারেন সাকিব।

ইফতেখার-সাকিব তান্ডবে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৮ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল। বিপিএলের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় যৌথ সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ৪৫ বলে ৬টি চার ও ৯টি ছক্কায় ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন ইফতেখার। ৯ বাউন্ডারি ও ৬ ওভার বাউন্ডারিতে ৪৩ বলে অনবদ্য ৮৯ রান করেন সাকিব। যা টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এই ইনিংস খেলার পথে বিপিএলের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন সাকিব।

পঞ্চম উইকেটে ৮৬ বলে বিপিএল রেকর্ড অবিচ্ছিন্ন ১৯২ রানের জুটি গড়েন সাকিব-ইফতেখার। পাশাপাশি রান বিবেচনায় এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। বল হাতে রংপুরের হাসান ৩১ রানে ও রউফ ৪২ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ২৩৯ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে মিরাজের ঘুর্ণিতে ১১ ওভারের মধ্যে টপ-অর্ডারের ছয় ব্যাটারকে হারায় রংপুর। এরমধ্যে মোহাম্মদ নাইম ১৮ বলে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন। মিরাজ নেন ৩ উইকেট।

লোয়ার-অর্ডারে নাওয়াজ ২৪ বলে ৩৩ রানের সাথে শামিমের ২৪ বলে অনবদ্য ৪৪ রানে হারের ব্যবধানটাই কমে রংপুরের। ৩টি চার ও ৪টি ছয় মারেন শামিম। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭১ রান করে রংপুর। বরিশালের মিরাজ ৩টি, ওয়াসিম-কামরুল ২টি করে উইকেট নেন।