স্বপ্নের মতো বিশ্বকাপ কাটছে বাংলাদেশের অদম্য মেয়েদের। চলমান অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের সবকটিতে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার সিক্সে ওঠে গেছে দিশা বিশ্বাসের নেতৃত্বাধীন ইয়াং টাইগ্রেসরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরের প্রথম ম্যাচেই সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল বাংলার বাঘিনীরা। তারপর দ্বিতীয় ম্যাচে লঙ্কান মেয়েদের বিপক্ষেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে লাল-সবুজের দল।
সবশেষ আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও জয়রথ অব্যাহত রাখল দিশা-প্রত্যাশারা। যদিও আগের দুই ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
অস্ট্রেলিয়া ও লঙ্কানদের হারিয়ে দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও দারুণ কিছু করবে বাংলাদেশ- এটা যেন প্রত্যাশিতই ছিল। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুটাও ছিল তেমনই দাপুটে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইয়াং টাইগ্রেসদের বিপক্ষে কোনো রকমে একশ’ পেরিয়েছে মার্কিনিদের ইনিংস।
শুরু থেকেই ইউএসএ ব্যাটারদের কোণঠাসা করে রাখে মারুফা ও দিশা জুটি। দু প্রান্ত থেকে চেপে ধরার পুরস্কারও আসে হাতেনাতে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন টাইগ্রেস অধিনায়ক দিশা। অর্থির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লাসা মুলাপুডি। ১২ বলে ৫ রান করেন উদ্বোধনী এ ব্যাটার।
প্রথম আঘাতের পর দ্বিতীয় উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেকটা সময়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটাররা স্কোরবোর্ডে রানের চাকা সচল না রাখতে পারলেও উইকেট অক্ষত রেখেছিলেন ঠিকই। তবে ১৫তম ওভারে আবারও জোড়া উইকেট। আবারও সেই দিশা বিশ্বাস। যদিও প্রথমটি ছিল রানআউট। ২০ রানের মাথায় থাকা দিশা ডিংরাকে রানআউটের ফাঁদে ফেলেন স্বর্ণা।
একই ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর গড়া স্নিগ্ধা পালকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন দিশা বিশ্বাস। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই বল হাতে বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন টাইগ্রেস এ অধিনায়ক। ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস থামে ১০৩ রানে। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেছেন দিশা বিশ্বাস।
মামুলি টার্গেট তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শঙ্কা জাগছিল একটা সময়। আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস খেলা প্রত্যাশা, স্বর্ণারা এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত জয় হাতছাড়া হয়নি। ১৫ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দিশা বিশ্বাস বাহিনী।
এর মধ্য দিয়ে গ্রুপ ‘এ’ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার সিক্সে ওঠে গেছে লাল-সবুজের দল।