দ্বিতীয় টেস্টে ভারতকে হারিয়ে বছর শেষ করতে চায় বাংলাদেশ

আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে শুরু হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বোলিং করার জন্য বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ফিট ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করার পাশাপশি জয় দিয়ে বছরটা শেষ করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এবং সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস চ্যানেল।

এ বছর ভারতের বিপক্ষেই বাংলাদেশের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অবিস্মরণীয় টেস্ট জয় দিয়ে বছর শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। তাই বছরের শেষ ম্যাচেও জয়ী হয়ে বছরটা স্মরণীয় করে রাখতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ।

পাঁজর ও কাঁধের ইনজুরির কারণে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। শংকা জেগেছিলো ঢাকা টেস্টে শুধুমাত্র ব্যাটার হিসেবে খেলবেন তিনি। তবে পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড জানিয়েছেন, এই টেস্টে বোলিং করার জন্য পুরোপুরি ফিট এই অলরাউন্ডার।

২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পরও চিরায়ত দুর্বল লংগার ভার্সনে সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা টাইগারদের বেশি ছিল। প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের সকালের সেশনে ৪৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রানে টেস্ট জিতে নেয় ভারত।

চট্টগ্রামের উইকেট দিন গড়ানোর সাথে-সাথে সহজ হলেও, মিরপুরের উইকেট স্পিন উপযোগী-পরিবর্তনশীল ও বাউন্সি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সাকিবের বোলিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে উঠবে।

বল হাতে সাকিবের বোলিংয়ের নিশ্চয়তা পাওয়া গেলেও পেসার এবাদত হোসেনকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এ মুহূর্তে দলের অন্যতম সেরা টেস্ট বোলার তিনি। সাইড স্ট্রেন ইনজুরির কারণে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করতে পারেননি এবাদত। তবে তার পরিবর্তে ঢাকা টেস্টে খেলবেন তাসকিন আহমেদ।

পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বলেছেন, ‘আমি যদি ঘরের বাইরে এসে কথা বলি, তাহলে তিন স্পিনারই থাকবে এবং তাসকিন দলে আসবে। খালেদও আছে। নির্বাচকদের কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি আমি ঘরের বাইরে এসে একটু কথা বলেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি যা ঘটতে দেখেছি। সুখবর হলো-সাকিব ভালো অবস্থায় আছে। উইকেট দেখে মনে হচ্ছে, সাকিব এখানে খুব ভালো করবে।’

বাংলাদেশের টেস্ট পরিসংখ্যান একেবারেই হতাশাজনক। ১৩৫টি ম্যাচ খেলে মাত্র ১৬টি জয় এবং ১০১টি ম্যাচ হেরেছে টাইগাররা। বাকি ১৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। বেশিরভাগ ড্র’ই হয়েছে বৃষ্টির বাঁধায়।

কিন্তু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে ১২ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে কোনো জয় নেই টাইগারদের। বৃষ্টির সহায়তায় দু’টি টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ।

হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজটিকে স্মরণীয় করে রাখাই প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশের। অন্য দিকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখতে এ ম্যাচ জিততে চাইবে ভারত। প্রথম টেস্ট জয়ের পর ১৩ ম্যাচে ৭ জয় নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পরই দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত।

মিরপুরের উইকেট যদি অতীতের মত থাকে বোলিংয়ে সুবিধা পাবে ভারত। প্রথম টেস্টের মত এই ম্যাচেও নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে পাচ্ছে না সফরকারীরা। ওয়ানডে সিরিজে বাঁ-হাতে বুড়ো আঙুলের ইনজুরিতে টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন তিনি। ভারতকে এ টেস্টেও নেতৃত্ব দিবেন লোকেশ রাহুল। একাদশে পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই ভারতের।

টেস্ট ফর্ম অনুসারে, দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের ক্ষেত্রে ফেভারিট ভারত। টানা দ্বিতীয়বারের মত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে হলে এ ম্যাচে জিততে হবে ভারতকে।

বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, ইয়াসির আলি, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, জাকির হাসান, রেজাউর রহমান, এনামুল হক বিজয়।

ভারত দল
লোকেশ রাহুল (অধিনায়ক), চেতেশ্বর পূজারা (সহ-অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋষভ পান্থ (উইকেটরক্ষক), কেএস ভরত (উইকেটরক্ষক), রবীচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, শারদুল ঠাকুর, মোহাম্মদ সিরাজ, উমেশ যাদব, অভিমন্যু ঈশ্বরন, নবদীপ সাইনি, সৌরভ কুমার ও জয়দেব উনাদকাট।

সংবাদ সূত্রঃ বাসস