এই পরিসংখ্যান যেন আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মনে আশার আলো ফুটাচ্ছে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে সেমিফাইনালে ওঠে কখনোই হারেনি আলবিসেস্তোরা। অঘটন ও চমকের বিশ্বকাপে এখনো টিকে আছে আর্জেন্টিনা।
সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে গেলেও পরে লিওনেল মেসিরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া মেসিদের প্রতিপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে মেসিদের সাহস জোগাতে পারে অতীত ইতিহাস। বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে হারার রেকর্ড নেই আর্জেন্টিনার। এই বিশ্বকাপের আগে চারবার সেমিফাইনাল খেলেছে আর্জেন্টিনা। চারবারই জিতেছে লিওনেল মেসির দল ও পূর্বসুরবীরা।
১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসরেই সেমিফাইনালে জিতে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হলেও সেবার ভিন্ন ফরম্যাটে খেলা হয়েছিল, সেমিফাইনাল ছিল না। এরপর ১৯৮৬, ১৯৯০ এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলে আর্জেন্টিনা। প্রতিবারেই আর্জেন্টিনা জয় লাভ করেছে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল জয়ের অভিজ্ঞতা আছে মেসিরও। ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সেমিতে জিতেছিল মেসির দল। নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ম্যাচটি ১২০ মিনিট পর্যন্ত ছিল গোলশূন্য। এরপর টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরোর নৈপুণ্যে জয় পেয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। তবে ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় মেসিদের। রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
এবারো একই সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আছে লিওনেল মেসির দল। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বরাবরই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে। ইতিহাস সেটাই বলে। কারণ, কাতার বিশ্বকাপের আগে এখন পর্যন্ত চারবার সেমিফাইনাল খেলেছে আর্জেন্টিনা। যেখানে একবারো হারেনি তারা। আসরের ফাইনাল নিশ্চিত করতে আগামী মঙ্গলবার রাত ১টায় সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচে নামার আগে সেমিফাইনালের পরিসংখ্যান কথা বলছে মেসিদের পক্ষেই। কাতার বিশ্বকাপের আগে এখন পর্যন্ত চারবার সেমিফাইনাল খেলেছে আর্জেন্টিনা। যেখানে একবারো হারের মুখ দেখতে হয়নি তাদের।
বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসর ১৯৩০ সালে সেমিফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৮৬ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে, ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপে এবং ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে। মাঝে ১৯৭৮ বিশ্বকাপে শিরোপা জিতলেও সেবার ফরম্যাটটি ছিল ভিন্ন রকমের। আর্জেন্টিনায় হওয়া ১৯৭৮ বিশ্বকাপে প্রথমে ১৬টা দল ৪ গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলে। সেই চার গ্রুপের ৮ দল আবার দ্বিতীয় রাউন্ডে দুই গ্রুপে ভাগ হয়। এই দুই গ্রুপের সেরা দুই দল খেলেছে ফাইনাল। যেখানে জয় তুলে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা। ১৯৩০ বিশ্বকাপে শুরুর আসরেই ফাইনাল খেলে আর্জেন্টিনা। সেবার ফাইনালে ওঠতে যুক্তরাষ্ট্রকে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। তবে শেষটা রাঙাতে পারেনি আলবিসেলেস্তেরা। ফাইনাল জিতে বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা নিজেদের করে নেয় উরুগুয়ে। এর পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ১৯৮৬ সালে আবারো সেমিফাইনালে পা রাখে আর্জেন্টিনা। যেখানে বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা।
আর ডিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতে দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে সালে ফের ইতালিকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে আর্জেন্টিনা। তবে ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করতে হয় তাদের। এর পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে মেসির নেতৃত্বে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। সেমিফাইনালে তারা হারায় নেদারল্যান্ডসকে। তবে আবারো ফাইনালে সেই জার্মান বাধার মুখে পড়ে মেসির দল। সে বাধা টপকাতে পারেনি মেসিরা। কাতার বিশ্বকাপে আবারো সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ সবশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট দল ক্রোয়েশিয়া। তবে ম্যাচের আগে পরিসংখ্যান থেকে সাহসী হতে পারেন মেসিরা। এখন দেখার পালা সেমিফাইনাল জিতে মেসিরা সেই পরিসংখ্যানটাকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারে কিনা।