দ. আফ্রিকার বিদায়ে সেমির স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

সাত সকালে নেদারল্যান্ডস একটা অঘটনই ঘটিয়ে বসল। ১৩ রানে হারিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে, তাতে বিদায়ঘণ্টাও বেজে গেল দলটির। এই জয়ে বাংলাদেশের সামনে খুলে গেল সম্ভাবনার দুয়ার। এখন পাকিস্তানকে হারিয়ে দিতে পারলেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের শেষ চারে চলে যাবে লাল সবুজের দল।

শুরুতে ব্যাট করে ডাচরা দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ছুঁড়ে দিয়েছিল ১৫৯ রানের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ২০ ওভারে ৮ উইকেট খুইয়ে ইনিংস শেষ করেছে ১৪৫ রানে। তাতেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে দলটির। সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেছে ভারতের সেমিফাইনালও।

এই হারের পরও অবশ্য এখন দলটির অবস্থান তালিকার দুইয়ে। পাঁচ ম্যাচ থেকে দলটি তুলে নিয়েছে পাঁচ পয়েন্ট। পরের দুই অবস্থানে থাকা পাকিস্তান আর বাংলাদেশের পয়েন্ট চার। এই দুই দল আজ মুখোমুখি পরের ম্যাচেই। ফলে ম্যাচ মাঠে গড়ালে দুই দলের কোনো এক দলের ছয় পয়েন্ট পাওয়া নিশ্চিত।

পাক-বাংলাদেশ ম্যাচ যদি বৃষ্টির কারণে মাঠে না-ও গড়ায়, তাহলেও কোনো সুযোগ নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। বর্তমানে দলটির নেট রান রেট ০.৮৭৪, আর তিনে থাকা পাকিস্তানের নেট রান রেট ১.১১৭। ম্যাচটা ভেসে গেলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দলের পয়েন্ট হবে পাঁচ, আর শ্রেয়তর রান রেটের কারণে পাকিস্তান চলে যাবে সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার দারুণ সুযোগ থাকা এই ম্যাচে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা নিয়েছিলেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। সাত সকালে পিচে ‘কিছু একটা’ দেখতে পেয়েছিলেন, সে কারণে একাদশে রাখা হয়েছিল বাড়তি পেসারও।

তবে ডাচ ইনিংস শুরুর পর দুই ওপেনার স্টেফান মাইবার্গ আর ম্যাক্স ওডাউড মিলে শুরুটা দুর্দান্তই করেছিলেন। পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে তুলে ফেলেছিলেন ৪৮ রান। মাইবার্গ আর ওডাউডের এই জুটি থামে ৫৮ রানে।

এরপরই টম কুপারের তোপের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২টি করে চার আর ছক্কায় ১৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, তাতে ডাচ ইনিংস পায় বড় রানের দিশা। দলীয় ৯৭ রানে ওডাউড ফেরেন ৩১ বলে ২৯ রান করে, ১১২ রানে ফেরেন কুপারও।

তার বিদায়ের পর আবারও গতি হারিয়েছিল ডাচরা। ১৫তম ওভারে কুপার ফেরার পরের দুই ওভারে দলটি রান তোলে মোটে ১১। তখন মনে হচ্ছিল, রানটা বুঝি ১৪০ ও ছোঁবে না ডাচদের!

৭ বলে ১ রান করা বাস ডি লিডার বিদায় নেন ইনিংসের ১৮তম ওভারে। এরপর থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটা কেবলই কলিন অ্যাকারম্যান আর অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডসের। শেষ ১৭ বলে দুজন তুলেছেন ৩৫ রান। অ্যাকারম্যান ৩ চার আর দুই ছক্কায় ২৫ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন, আর অ্যাডওয়ার্ডস দুই চারে ৭ বলে করেন ১২ রান। তাতেই ডাচরা পেয়ে যায় ১৫৮ রানের লড়াকু পুঁজি। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে ১৫৯ করতে হতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

দক্ষিণ আফ্রিকা সেটাই পারেনি। দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক আর টেম্বা বাভুমাকে খুইয়ে বসে পাওয়ারপ্লেতেই। এরপরেও সেই একই দৃশ্যের অবতারণা দেখেছে অ্যাডিলেড ওভাল। থিতু হয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন সবাই। রাইলি রুশো, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলারদের কেউই ২৫ এর বেশি রান করতে পারেননি। দলীয় ১২০ রানে যখন সপ্তম ব্যাটার হিসেবে হাইনরিখ ক্লাসেন বিদায় নিচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয়টা নিশ্চিত হয়ে গেছে মূলত তখনই।

তবু দলটির একটা মিরাকলের আশা ছিল তখনও। সেই কাজটা করতে পারেননি কেউ।