ভারতকে হারিয়ে গ্রুপ-২-এর শীর্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা

চলতি বিশ্বকাপে গতকাল পর্যন্ত শতভাগ জয় পাওয়া ভারত ছিল একমাত্র দল। আজ সেই দলটাই যেন হুট করে অচেনা হয়ে গেল। বাজে ফিল্ডিং, ক্যাচ এবং রান আউট মিস করে তারা হেরে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। রোহিত শর্মাদের ৫ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেম্বা বাভুমার দল উঠে এলো গ্রুপ-২-এর শীর্ষে।

রান তাড়ায় নেমে প্রোটিয়াদের শুরুটাও হয়েছে বাজে। দলীয় ৩ রানেই আর্শদীপ সিংয়ের শিকার হন দারুণ ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি’কক। বাংলাদেশের বিপক্ষে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করা রাইলি রুশোকেও (০) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন আর্শদীপ। এরপর অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (১০) মোহাম্মদ শামির বলে দিনেশ কার্তিকের গ্লাভসবন্দি হলে ২৪ রানে ৩ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ধীরগতিতে দলকে টানতে থাকেন এইডেন মার্করাম এবং ডেভিড মিলার। ১২তম ওভারে অশ্বিনের বলে মার্করামের সহজ একটা ক্যাচ ছাড়েন বিরাট কোহলি। অশ্বিন যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না!

পরের ওভারে রোহিত শর্মার সৌজন্যে নিশ্চিত রান আউট থেকে বেঁচে যান ডেভিড মিলার। ৩৮ বলে ফিফটি তুলে নেন মার্করাম। আর্শদীপের ওই বলেও দুই ফিল্ডার তালগোল পাকিয়ে ক্যাচ ফেলেন। অবশেষে ৪১ বলে ৫২ রান করা মার্করামকে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। ৬০ বলে ৭৬ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি যখন ভাঙে, ততক্ষণে ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রণে। ডেভিড মিলার বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। জয়ের জন্য যখন ১৫ বলে ১২ রান প্রয়োজন, তখন স্টাবসকে (৬) এলবিডাব্লিউ করে দেন অশ্বিন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি স্টাবস।

শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২ রানের। শামির প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে ফিফটি (৪০ বলে) পূরণ করেন মিলার। পরের পাঁচ বলে ২ রান দেন শামি। শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ রানের। বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে পরের দুই বলে বাউন্ডারি মেরে দুই বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে দলের জয় নিশ্চিত করেন মিলার। এই মারকুটে ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ৪৬ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৫৯* রানে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৩ রান তোলে ভারত। প্রথম ৯ বলে তারা কোনো রানই নিতে পারেনি। পঞ্চম ওভারে এসেই দ্বিতীয় বলে রোহিতকে (১৫) কট অ্যান্ড বোল্ড করেন লুঙ্গি এনগিডি। রাহুলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। একই ওভারের শেষ বলে মার্করামের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ৯ রানে। পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ৩৩ রান তুলতে পারে ভারত! চোখ-ধাঁধানো কাভার ড্রাইভে কাগিসো রাবাদকে জোড়া বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন কোহলি। কিন্তু ১২ রানেই তাকে থামিয়ে দেন লুঙ্গি! এবার সত্যিই চাপে পড়ে যায় ভারত।

প্রোটিয়া পেসারের চতুর্থ শিকার হন দিপক হুদা (০)। এরপর হার্দিক পান্ডিয়া (২) আর দিনেশ কার্তিকও (৬) ফিরেন দ্রুত। এক প্রান্ত আগলে ৩০ বলে ফিফটি তুলে নেন সূর্যকুমার যাদব। তার ব্যাটেই ১৫তম ওভারে ভারতের স্কোর তিন অঙ্ক ছাড়ায়। শেষের দিকে জোড়া উইকেট নিয়ে ভারতের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন পার্নেল। ১৯তম ওভারে তার শিকার হন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। একই ওভারের পঞ্চম বলে ৪০ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৬৮ করা সূর্যকুমারকে ফিরিয়ে ধরেন তৃতীয় শিকার। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৩৩ রান তোলে ভারত। ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন লুঙ্গি। আর পার্নেল মাত্র ১৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।