টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। রুদ্ধশ্বাস এ জয়ে আসরটির সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল টাইগাররা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টিয়েছে। হাসান মাহমুদের ১৮-তম ওভারের শেষে দুই বলে শন উইলিয়ামসের টানা দুই চার, সাকিবের দুর্দান্ত থ্রোতে ম্যাচে বাংলাদেশের ফেরা, শেষ ওভারে এনগারাভার হাঁকানো ক্যারিয়ারের প্রথম ছয় এবং মোসাদ্দেকের ফিরে আসা। শেষ দুই বল এই অফস্পিনার করলেন ৩ বার। তিন ডেলিভারিতেই ডট দিয়ে হৃদস্পন্দন আটকে দেয়া এক মহা নাটকীয়তার ম্যাচে গ্যাবায় জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ মূলত জিতেছে দুইবার। ১ বলে ৫ রান দরকার-এমন সমীকরণে ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্ট্যাম্পিংয়ে ফিরিয়ে জয়ের আনন্দে বাংলাদেশকে ভাসান মোসাদ্দেক। কিন্তু না! দেখা গেল, বল স্ট্যাম্পের লাইন পার করার আগেই তালুবন্দি করে স্ট্যাম্প ভেঙেছেন সোহান। তাই নো বল! ফ্রি হিট এবং সমীকরণ ১ বলে ৪ রান! মাঠে ত্যাগের পর আবার সবাই ফিরে আসেন মাঠে। নাটকের শেষ অঙ্কও মঞ্চস্থ হলো মোসাদ্দেকের আরেক ডট বলে। শেষমেশ বাংলাদেশই জয়ী।
১২-তম ওভারে আক্রমণে এলেন তাসকিন আহমেদ। আর এসেই ভাঙলেন শন উইলিয়ামস ও রেজিস চাকাভার ৩৪ রানের জুটি। তাসকিনের ৩ ও মোস্তাফিজের ২ উইকেটে গ্যাবায় বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ আরও বেড়েছে। প্রতিবেদনটি লেখার সময় জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৬ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান। জয়ের জন্য এখনও জিম্বাবুয়ের দরকার ২৪ বলে ৪৬ রান।
বাংলাদেশের দেয়া ১৫১ রানের টা ব্র্গেযাট করতে নামা জিম্বাবুয়েকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন ইনিংসের শুরুতেই উইকেট তুলে নেয়াকে অভ্যাসে পরিণত করা বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ওভারে তিনি তুলে নিয়েছেন জোড়া উইকেট। ফলে জিম্বাবুয়েকে ১৫১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই বড় ধাক্কা দিলেন দেশসেরা এই পেসার।
বাংলাদেশের দেয়া ১৫১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তাসকিনের দ্বিতীয় বলেই কভার অঞ্চল দিয়ে সীমানা ছাড়া করেছিলেন ওয়েসলি মাধেভেরে। তাসকিন প্রতিশোধ নিলেন পরের বলেই। অফ স্টাম্পের বাইরে বল করে পরাস্ত করলেন মাধেভেরেকে। ডিপ থার্ডম্যানে মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সেটা ধরতে একটু বেগ পেলেও শেষমেশ সফল হন মোস্তাফিজ। এর ধারাবাহিকতা তাসকিন ধরে রাখলেন পরের ওভারেও। অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে জোড়া আঘাত করেন এই পেসার।
এরপর একই ওভারে মিলটন শুম্বা এবং জিম্বাবুয়ের সেরা ব্যাটার সিকান্দার রাজাকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ। এই বাঁহাতির বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে আফিফ হোসেনের হাতে বন্দি হন স্বপ্নের ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজা।
এরপর রেজিস চাকাভাকে নিয়ে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শন উইলিয়ামস। তারপর আক্রমণে ফিরেই আবার ম্যাচে ভালোভাবে বাংলাদেশকে ফেরান তাসকিন। এরপর রায়ান বার্লকে নিয়ে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৬৩ রান যোগ করেন শন উইলিয়ামস। এরপর ৬৪ রান করা এই ব্যাটারকে দুর্দান্ত রান আউট করে জয়ের স্বপ্ন উজ্জ্বল করেন সাকিব। আর এরপরের নাটকীয়তায় শেষ জয়টা বাংলাদেশেরই।