আগামী ২১ নভেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২-এর আসর। এই বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন। এই মহোৎসবে বিশ্বের প্রায় সব প্রান্ত থেকেই ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় করবেন। অনেকেই বিশ্বকাপ চলাকালীন বিভিন্ন ধরনের আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে ওঠেন। কিন্তু চাইলেই সবধরনের ফুর্তি করা যাবে না কাতারে। বরং বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এমনকি নিয়ম না মানলে পড়তে হবে কঠোর শাস্তির মুখেও।
এবার ফুটবল বিশ্বকাপের চেনা কিছু দৃশ্য দেখা যাবে না। কারণ যুক্তরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অগ্রিম সতর্কবার্তা জানিয়েছে। তারা মনে করছে আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে কেউ অবৈধ যৌনতায় জড়ালে, পার্টি করলে, মাদক নিলে কিংবা সমকামীতার কারণে সাত বছরের জেল-জরিমানা হতে পারে। এদিকে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাও ভক্তদের অনুরোধ করেছে কাতার বিশ্বকাপে তাদের আচরণের সেরাটা প্রদর্শন করতে।
প্রিয় দলের খেলা শেষে রাতভর পার্টি, রাস্তায় হই-হুল্লোড় এসব কাতারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি বিশ্বকাপ দেখতে এসে হোটেলে ওঠে স্বামী-স্ত্রী না হলে যৌন মিলনও করা যাবে না। বিশেষ করে \’ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড\’ বা এক রাতের যৌনমিলন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নিয়মের ব্যতিক্রম হলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম \’ডেইলি স্টার\’-এর বরাতে \’মিরর\’ এমনটাই জানিয়েছে। কাতারে সমকামিতাও নিষিদ্ধ। ২০২২ বিশ্বকাপে তাই সমকামিতার সমর্থনে পোস্টার বা পতাকা ওড়ানো নিষিদ্ধ থাকবে। এমনকি মদ্যপানেও থাকবে নিষেধাজ্ঞা।
কাতারের জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটির প্রধান মেজর জেনারেল আব্দুলআজিজ আল আনসারী জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো দেওয়ার কারণ আসলে বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থেই।
তার মতে, কাতারের সাধারণ লোকজন হয়তো এসব মেনে নিতে পারবেন না। কেউ কেউ আগ্রাসীও হয়ে উঠতে পারেন। কাতার বিশ্বকাপে ফিফার প্রধান নির্বাহী নাসের আল খাতের বলেন, “প্রত্যেক সমর্থকের নিরাপত্তা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সর্বসমক্ষে ব্যক্তিগত ভালবাসা দেখানো আমাদের দেশের সংস্কৃতি নয়। সেটা সকলের জন্যই প্রযোজ্য।”
কাতার সুপ্রিম কমিটির পক্ষ থেকেও সকলকে সতর্ক করা হয়েছে। কাতার ফুটবল সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কাতার খুব রক্ষণশীল দেশ। এখানে অনেক কিছুই সম্ভব নয়। সমকামিতা শুধু সেখানে প্রকাশ করা উচিত যে দেশে এটা মানা হয়।”