রাশিয়ান স্বর্ণকন্যা বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মার্গারিতা মামুন গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকায় এসেছেন শুভেচ্ছাদূত হয়ে। গতকাল রবিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বনানী ১১ নম্বর সড়কের ফুটপাতে রিও অলিম্পিকের স্বর্ণপদক হাতে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জিমন্যাষ্ট মার্গারিতা মামুন। আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকার মিরপুরে ইনডোর স্টেডিয়ামে সেন্ট্রাল সাউথ এশিয়ান আর্টিস্টিক জিম্যানাষ্টিকস শুরু হবে। সেই অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হয়ে ২০১৬ রিও অলিম্পিক গেমসে রিদমিক জিম্যানষ্টিকস অলঅ্যারাউন্ড ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয়ী মার্গারিতা মামুন এসেছেন তার পরিবার নিয়ে। এক পুত্র সন্তান লেবস, রাশিয়ান স্বামী আন্তর্জাতিক সাঁতার পদকপ্রাপ্ত আলেকসান্দার এবং মা এনা মামুন ঢাকায় এসেছেন। মা-মেয়ে আগেও এসেছিলেন।
মার্গারিতার বাবা ছিলেন বাংলাদেশের রাজশাহীর ছেলে। তার বাবা রিও অলিম্পিক গেমস চলাকালীন মারা গেছেন। যখন মেয়ে স্বর্ণ জিতে আনন্দে ভাসছিলেন। তখনই বাবা হারানোর বেদনায় নীল হন। বাংলাদেশের মানুষ জেনে গিয়েছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত একজন নারী স্বর্ণ জয়ের খবর দিয়েছেন। আনন্দটা তখনও জমাট বেধে ছিল। কিন্তু যিনি স্বর্ণ জয় করেছিলেন তার মনটা ভালো ছিল না। তার পরও সেদিন হাসি মুখে কথা বলতে হয়েছিল সবার সঙ্গে।
মার্গারিতা নিজেও ভাবেননি রিও অলিম্পিকে খেলতে পারবেন। চার বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষন নিয়েছেন মার্গারিতা। ১৫ বছর আগেও বাংলাদেশে এসেছিলেন মার্গারিটা মামুন। কিন্তু এবার আসলেন ২০১৬ সালে অলিম্পিক স্বর্ণ জেতার পর।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন হাস্যোজ্জোল এই জিমন্যাষ্ট। বাবার বাড়ি রাজশাহীতে। রাজশাহীর বিখ্যাত আম, সেখানকার তৈরি সিল্ক জনপ্রিয়। সেটা জানা আছে মার্গারিতার। নিজেই বলেছেন, ‘কেউ রাজশাহীতে গেলে বলি আমার জন্য কার্টুন ভরে আম আনবে। রাজশাহীর সিল্ক আমার পছন্দ। ইচ্ছে ছিল বাংলায় কথা বলবো, হয়ে উঠেনি।’
বাংলা এবং ইংরেজি কোনোটাই ভালো দক্ষতা না থাকায় দোভাষীর মাধ্যমে রাশিয়ান ভাষায় কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘের নারী দূত হয়ে কাজ করছেন মার্গারিতা। ইচ্ছে আছে বাংলাদেশের নারী সমাজের উন্নতির জন্য কাজ করবেন। নারী জাতিকে সাহস দেওয়ার কাজটি করতে চান তিনি।
বলেছেন, ‘আমার যত অভিজ্ঞতা আছে দেবো। যখন দরকার হবে আমি এগিয়ে আসবো। আমি গর্ববোধ করি আমাদের বাংলাদেশের জিম্যানষ্টিকস আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই করে।’
নারী খেলোয়াড়দের পোষাক নিয়ে মার্গারিতা বলেন, ‘আমি টোকিও অলিম্পিকেও দেখেছি মিশরের মেয়েদের পোষাক। মুসলিম নারীরা কীভাবে খেলছে। আসলে পোষাক কোনো ব্যাপার না। ধর্ম, পরিবেশ এসব কোনো ব্যপার না। ইচ্ছাটাই আসল।’