ক্যাচ মিসের মাশুল দিল বাংলাদেশ

ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো উইকেটকে ঢাকার স্লো-টার্ন উইকেটের সঙ্গে ‍তুলনা করেছিলেন। কিন্তু ম্যাচে হলো তার উল্টো। আগে ব্যাট করে বড় পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। তবে সেই পুঁজি গড়েও লঙ্কানদের বিপক্ষে জিততে পারেনি টাইগাররা। ক্যাচ মিস ও বোলারদের ভুলে ম্যাচ বের করে নেয় লঙ্কানরা। ঝড়ো ব্যাটে শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ উইকেটের জয় এনে দেন চতির আশালাঙ্কা ও ভানুকা রাজাপাকশে।

আজ রোববার বিকেল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে বাংলাদেশ নির্ধারিত ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তোলে। ব্যাট হাতে চার বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারিতে ৩৭ বলে ৫৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। জবাবে ৭ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে ৪৯ বলে ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন আশালাঙ্কা।

গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ ছিল উদ্বোধনী জুটিতে রান না পাওয়া ও পাওয়ার প্লেতে ঠিকভাবে ব্যবহার করা। সুপার টুয়েলভে এসে তা খানিকটা দূর হয়েছে। শেষ তিন ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ ১১ রান আসলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাঈম শেখ ও লিটন দাসের ব্যাটে দারুণ সূচনা পায় টাইগাররা। ৪০ রানে টাইগারদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন লাহিরু কুমারা। ষোল বলে ১৬ রান করে মিড-অফে দাসুন শানাকার তালুবন্দি হন লিটন।

তিনে এসে চরিত আশালাঙ্কাকে দুটি চার মেরে দুর্দান্ত শুরুর আভাস দেন সাকিব। কিন্তু তার আর দীর্ঘায়িত হলো না। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে লেগ সাইটে ফ্লিক করতে গিয়ে চামিকা করুনারাত্নের শিকার হন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ফর্মে না থাকায় প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া মুশফিকুর রহিমও ফিরলেন চেনা রুপে। ১৪তম ওভারে কুমারাকে দারুণ এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪৪ বলে বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় অর্ধশতক তোলেন নাঈম। খানিক সময় পরই বিনুরার কট অ্যান্ড বোল্ডে ফেরেন নাঈম। ৫২ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ৬২ রান করেন এই ওপেনার।

শঙ্কা কাটিয়ে ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়েছেন মুশফিক। ১২ ইনিংস পেরিয়ে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। মাত্র ৩২ বলে বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটির দেখা মেলে তার। তার ব্যাট হাসার দিনে হেসেছে বাংলাদেশও। তার ব্যাটে ৩৭ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ১৭১ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি লঙ্কানদের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই নাসুম আহমেদের শিকার হন ওপেনার কুশল পেরেরা। নিজের চতুর্থ বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। তিনে এসে পাথুম নিসাঙ্কার সঙ্গে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন চতির আশালাঙ্কা। ৬৯ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো নিসাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান সাকিব।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে এই ওপেনারকে ফিরিয়ে দলকে দারুণ ব্রেক থ্রু এনে দেন তিনি। ২৪ বলে ২১ করে বোল্ড হন তিনি। এতেই শহিদ আফ্রিদিকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় পৌঁছান তিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে নতুন ব্যাটসম্যান আভিশকা ফার্নান্দোকেও বোল্ড করেন সাকিব। পরের ওভারে বল করতে এসে নতুন ব্যাটসম্যান ভানিন্দু হাসারাঙ্গাকে সাজঘরে ফেরান সাইফউদ্দিন।

১৩তম একবার এবং ১৫তম ওভারে দ্বিতীয়বার লিটন দাসের কাছ থেকে জীবন পান ভানুকা রাজাপাকশে। দুইবারই তার তোলা ক্যাচ ঠিকভাবে রাখতে পারেননি লিটন। জীবন পেয়ে দারুণ এক ছক্কায় আশালাঙ্কার সঙ্গে দারুণ অর্ধশতক গড়েন তিনি। শেষের দিকে পাঁচ ওভারে দরকার ছিল ৫১ রান। বল করতে এসে এক ওভারেই ২২ রান দিলেন সাইফ।

শেষের দিকে বাংলাদেশি বোলারদের উপর তাণ্ডব চালায় লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ২৮ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তোলেন রাজাপাকশে। দুইবার জীবন পাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে ১৯তম ওভারে ফেরান নাসুম। পরের বলে চার মেরে দলকে জিতিয়ে দেন ৪৯ বলে অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংস খেলা আশালাঙ্কা।

Scroll to Top