বাংলাদেশ দলের উইকেটের পেছনে সাম্প্রতিক সময়ে তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান সফলভাবে জায়গা করে নিয়েছেন। যদিও এই জায়গায় গত ১৬ বছর ধরেই সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন মুশফিকুর রহিম। নিজের ৮৬ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৮২ ম্যাচ কাটিয়েছেন উইকেটের পেছনে।
এবার টাইগারদের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো সোহানের সঙ্গে সেই মুশফিককেই পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানালেন। আর এই বিষয়টি দেশের ক্রিকেট সফল অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সহজভাবে নিতে পারেননি। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, \”দলের খবর ড্রেসিং রুম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।\”
মুশফিক ইস্যুতে মাশরাফী লিখেছেন, \”১৬টা বছর যে মানুষটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দিচ্ছে তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আপনি যত বড় ক্ষমতাধর মানুষ হন না কেন একটু জায়গা বুঝে বলা উচিত। মুশফিক কিভাবে জাতীয় দলে এসেছে তা সবাই জানে। সিম্পলি তার ব্যাটিং দক্ষতা, একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে শুধু কিপার হিসেবেই খেলা যেত তার উদাহরণ ভরি ভরি। কিন্তু গিলক্রিস্ট আসার পর সব হিসেব পাল্টে যায়, যার সূত্র ধরে ইন্ডিয়া টিমে দেখেছি রাহুল দ্রাবিড়কেও কিপিং করতে হতো, যাতে দল সুবিধামতো এক্সট্রা একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলাতে পারে। অবশ্যই সেটা লিমিটেড ক্রিকেটে।\”
তিনি আরও লিখেছেন, \”বিশ্ব ক্রিক্রেটের দুজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটার সেটা আবার নিজ দলের খেলোয়াড়কে আপনি যুদ্ধ করে বাঁচতে বলবেন সেটা ড্রেসিং রুম পর্যন্ত থাকাই ভালো। অবশ্যই দলের স্বার্থ সবার আগে, দলের আগে কোনো খেলোয়াড় হতে পারে না। কিন্তু যেসব ক্রিকেটাররা দেশের হয়ে খেলতে নামে তারা কোনো সহানুভূতি নিয়ে নয়, বরং তারা শরীরের সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দলে জায়গা পায়। আর মুশফিকের সে গল্প আমরা সবাই জানি তার নিবেদন কি পর্যায়ে। বাংলাদেশের হাজার হাজার উঠতি ক্রিকেটারদের আইডল সে। সোহান সম্ভবত দলের সেরা কিপার। সঙ্গে লিটন, এক সিরিজ গ্যাপে যোগ হলো মুশফিক। এক দলে এতো কিপার এ তো আনন্দের, তা না হয়ে বের হয় বিষাদ। এতটুকু সামাল দিতে না পারলে তো সমস্যা যা একপর্যায়ে দলের ভিতর অদৃশ্য এক বাজে প্রতিযোগিতা চলে আসবে। টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত তারা তাদের মতো করে নিবে এটাই তো স্বাভাবিক এবং অবশ্যই ভালোর জন্য নিবে। সফল হলে তালি না হলে গালি, যা সারা বিশ্বেই হচ্ছে। কে খেলবে,কোন পজিশনে খেলবে,কার রোল কি এগুলো তো দলের একান্ত পরিকল্পনা যা ড্রেসিং রুমে শুরু আবার ড্রেসিং রুমেই শেষ হয়। বাহিরে বলতে গেলে তো খেলোয়াড়ের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, যা তার স্বাভাবিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।\”
তরুণ ক্রিকেটার সোহানের জন্য মুশফিকের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়া কঠিন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, \”আমি শুধু ভাবছি এতে কি সোহানের জন্যও খুব ভালো হলো যে ছেলেটা দুই ম্যাচে সব দেখিয়ে টিকে থাকতে হবে, তাহলে বিগত দুই সিরিজ সে যা করল তার কি হবে। আর লিটন কি বলবে এখন, ও তো কিপিং ভুলেই যাবে। আর মুশফিককে পারফর্ম করতে হবে ১৬ বছর খেলার পর এটা বলে দেওয়ার কিছু নাই, সে খুব ভালো করেই জানে বরং বাহিরে এভাবে বললে তার নিবেদনকে অসম্মানিত করা হয় যা তার প্রাপ্য না। সে সেরা ব্যাটসম্যান বলেই ১৬ বছর দেশকে সার্ভিস দিয়েছে। আবার দলের প্রয়োজনে তাকেই কিপিং করতে হতে পারে। তখন যদি সে না বলে সেটা কি ভালো শোনাবে। দলে প্রতিযোগিতা সবসময় দলের সেরাটা বের করে আনে তবে সেটা সুস্থ হতে হবে। কাউকে আঘাত করে নয়।\”