পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র তুরস্কের শক্তিশালী রক্ষণব্যূহ দ্বিতীয়ার্ধে ভেঙে পড়লো ইতালির সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে। এরপর সফরকারীদের জালে তিনবার বল পাঠিয়ে ইউরোয় শুভসূচনা করল আজ্জুরিরা।
ইউরো-২০২০ এর উদ্বোধনী ও গ্রুপ \’এ\’ এর প্রথম ম্যাচে শুক্রবার অন্যতম ভেন্যু রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোতে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে ইতালি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে তুরস্কের ডিফেন্ডার মেরিহ ডেমিরাল নিজেদের জালে বল জড়ানোর পর ব্যবধান বাড়ান দুই স্ট্রাইকার সিরো ইমোবিল এবং লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে।
করোনা মহামারিতে সবার আগে বিপর্যস্ত হওয়া ইতালি ইউরোর এবারের আসরের প্রথম ম্যাচের আয়োজক হিসেবেও দারুণ সফল। এই মহামারির মাঝেও তারা নাচ, গান আর আতশবাজিতে সমৃদ্ধ এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছে। জমকালো অনুষ্ঠান এবং পুরো ম্যাচ উপভোগ করতে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন ধারণক্ষমতার ২৫ শতাংশ দর্শক, সংখ্যায় যা প্রায় ১৬ হাজার। এছাড়া মাঠের বাইরে রোমের বিভিন্ন স্থানে বড়পর্দায় দেখানো হয়েছে পুরো আয়োজন। ম্যাচ শেষে অবশ্যই তাদের আনন্দ হয়েছে দ্বিগুণ। কারণ আসরের প্রথম ম্যাচেই দারুণ জয় পেয়েছে তাদের দল।
এই ম্যাচ খেলার আগে ২০১৫ সালের পর এই প্রথম বড় কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে নামা ইতালির প্রস্তুতি ছিল দারুণ। ২০১৮ বিশ্বকাপে না খেলতে পারার হতাশা ভুলে নতুন কোচ রবার্তো মানচিনির অধীনে দলটি ইউরোর বাছাইপর্বে সবগুলো ম্যাচ জিতে এসেছে। দলটি তাদের ঐতিহ্যবাহী রক্ষণাত্মক ধাঁচ ছেড়ে আক্রমণে জোর দিতেও এখন সিদ্ধহস্ত। সবমিলিয়ে টানা ২৭ ম্যাচে অপরাজিত থাকা দলটি তাই ছিল স্পষ্ট ফেভারিট। তবে শুরুতে ইতালিকে বেশ ভুগিয়েছে অতি রক্ষণাত্মক খেলা তুরস্ক।
দল হিসেবে তুরস্কও বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল। এই বছর টানা ছয় ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই অপরাজিত থাকা দলটি প্রথমার্ধে ইতালিয়ানদের সামনে রীতিমত রক্ষণের প্রাচীর তুলে দিয়েছিল। ইউরো বাছাইয়ে ফ্রান্স এবং বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নেদারল্যান্ডস এবং নরওয়েকে হারিয়ে দেওয়া দলটির রক্ষণব্যূহ ভাঙতে হেন কোনো চেষ্টা নেই যা ইতালি করেনি। কিন্তু প্রথমার্ধে অসংখ্যবার চেষ্টা করেও তাদের টলাতে পারেনি মানচিনির শিষ্যরা।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলার মোড় ঘুরে যায় ডেমিরালের এক ভুলেই। ৫৩তম মিনিটে ডোমেনিকো বেরার্দির ক্রসে কাট আউট করতে গিয়ে নিজের দলের গোলরক্ষককেই পরাস্ত করে বসেন জুভেন্টাসের তুর্কি ডিফেন্ডার। এই গোল হজমের পরই নিজেদের রক্ষণ প্রাচীর কিছুটা আলগা করে দেয় তুরস্ক। চেষ্টা করে প্রতি আক্রমণের। কিন্তু ফল হয় উল্টো।
৬৬তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইতালি। রোমার ডিফেন্ডার লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার শট তুর্কি গোলরক্ষক উগুরজান চাকির ঠেকিয়ে দিলে বল পেয়ে যান ইমোবিল। আর তা থেকে সহজেই গোল আদায় করে নেন লাৎসিওর স্ট্রাইকার। এরপর ৭৯তম মিনিটে ইমোবিলের বাড়ানো বলে লক্ষ্যভেদ করে তুরস্কের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন নাপোলির স্ট্রাইকার ইনসিনিয়ে।
এবার আসরের প্রথম ৫১ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ইউরোপের ১১টি ভিন্ন ভিন্ন শহরে।