সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর লড়াকু পুঁজির পর বল হাতে লঙ্কানদের একাই ধসে দিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ভানিন্দু হাসারাঙ্গা দারুণ প্রতিরোধ গড়লেও নির্ধারিত ওভারের আগেই ৩৩ রানের জয় পেয়েছে টাইগাররা। এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ এ এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। একই সঙ্গে ওয়ানডে সুপার লিগে আরও ১০ পয়েন্ট যুক্ত হলো টাইগারদের।
আজ রোববার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে এসে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান করেন তামিম-মুশফিকরা। জবাবে ব্যাট করতে এসে ১১ বল বাকি থাকতেই সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ২২৪ রানে থামে লঙ্কানদের ইনিংসের গতি।
বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে এসে শুরুটা দারুণ হয় দুই সফরকারী ব্যাটসম্যান দানুশকা গুনাথিকালাকা ও কুশল পেরেরার। তাসকিন আহমেদকে একের পর এক চারে দ্রুত রান তুলতে থাকেন দানুশকা। তবে এই লঙ্কান ওপেনারকে থিতু হতে দেয়নি মেহেদি হাসান মিরাজ। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে ২১ রান তুলতেই তাকে সাজঘরে ফেরান এই স্পিনার।
তাসকিনের শুরুটা ভালো না হওয়াতে তার জায়গায় তামিম আক্রমণে আনেন মুস্তাফিজুর রহমানকে। প্রথম বলে এক রান দিয়ে পরের বলেই নতুন ব্যাটসম্যান পাথুম নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ। আফিফ হোসেনের তালুবন্দি হওয়ার আগে ১৩ বলে ৮ রান যোগ করেন নিশাঙ্কা।
দুই উইকেট হারানোর পর লঙ্কানদের হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ওপেনার পেরেরা ও কুশল মেন্ডিস। তাদের প্রতিরোধী ৪১ রানের জুটিতে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। মেন্ডিসকে ব্যক্তিগত ২৪ রানে মিরাজের তালুবন্দি করান তিনি। এটি তার স্বীকৃত ক্রিকেটে ১ হাজারতম উইকেট। খানিক সময় পর স্বাগতিক ওপেনার পেরেরাকে বোল্ড করেন মিরাজ। ফেরার আগে ৫০ বলে ৩০ রান যোগ করেন তিনি।
রান তাড়া মরিয়া হয়ে ওঠে লঙ্কানরা। তবে উইকেটের নেশা চেপে ধরে মিরাজকে। নিজের পরের ওভারের এসে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকেও একই কায়দায় সাজঘরে ফেরান তিনি। দলীয় ১০২ রানের মাথায় আবারও উইকেটে আঘাত হানেন মিরাজ। ২৪ বলে মাত্র ৩ রান করা আশেন বান্দারাকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান তিনি।
দাসুন শানাঙ্কাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হাসারাঙ্গা। তাদের প্রতিরোধী জুটিতে ভাঙন ধরান সাইফউদ্দিন। ১৪৯ রানের মাথায় শানাঙ্কাকে বোল্ড করে ৪৭ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। খানিক পরই ঝড়ো ব্যাটে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন হাসারাঙ্গা। মাত্র ৩১ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছয়ে পঞ্চশ করেন তিনি।
সপ্তম উইকেটের জুটিতে হাসারাঙ্গার সঙ্গে ব্যবধান কমাতে থাকেন ইসুরু উদানা। হাসারাঙ্গার ঝড়ো ব্যাটে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছিল লঙ্কানরা। তবে বিধ্বংসী হয়ে ওঠা এই অলরাউন্ডারকে দেরি হলেও ফেরাতে সক্ষম হন সাইফউদ্দিন। দেড় ঘণ্টায় ৬০ বলে ৭৪ করে আফিফের তালুবন্দি হন তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলেই উদানাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মুস্তাফিজ। মিড উইকেটে মিরাজের তালুবন্দি হওয়ার আগে ২১ রান করেন তিনি। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে দুশমন্থ চামিরা সাইফের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজ। এতে করে ৩৩ রানে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।
লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ করে হাসারাঙ্গা। স্বাগতিকদের হয়ে একাই চার উইকেট শিকার করেন মিরাজ। এ ছাড়া তিনটি উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ ও দুটি উইকেট শিকার করেন সাইফউদ্দিন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে এসে তিন ব্যাটসম্যানের অর্ধশতকে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। তামিম ইকবালের পাশাপাশি মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহও ফিফটির দেখা পান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন মুশফিক। সফরকারীদের হয়ে একাই তিন উইকেট শিকার করেন ডি সিলভা।