বার্সেলোনা দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল হারতে বসা ম্যাচের শেষ মুহূর্তে। দুই গোল করে ম্যাচ নিল অতিরিক্ত সময়ে। কম নাটক হলো না সেখানেও। শেষ পর্যন্ত আট গোলের শ্বাসরুদ্ধ লড়াইয়ে গ্রানাদাকে হারিয়ে কোপা দেলরের সেমি-ফাইনালে পা রাখল রোনাল্ড কুমানের দল।
গ্রানাদার মাঠে বুধবার রাতে প্রতিযোগিতাটির শেষ আটে নির্ধারিত সময়ে ২-২ সমতার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ৫-৩ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। গত মাসে এই মাঠে লা লিগার ম্যাচে ৪-০ গোলে জিতেছিল কাতালান দলটি।
কেনেদি ও রবের্তো সলদাদোর গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া গ্রানাদা দেখছিল দারুণ এক জয়ের স্বপ্ন। শেষ দিকে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে অঁতোয়ান গ্রিজমান ও জর্দি আলবার গোলে সমতা টানে বার্সেলোনা। অতিরিক্ত সময়ে গ্রিজমান তাদের এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা ফেরান ফেদে ভিকো। পরে ফ্রেংকি ডি ইয়ং ও আলবার গোলে জয়োল্লাসে মেতে ওঠে সফরকারীরা।
প্রথম সাত মিনিটে ভালো দুটি সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনা। চতুর্থ মিনিটে কাছ থেকে রোনালদ আরাহোর ভলি ঠেকান গোলরক্ষক। সপ্তম মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে লিওনেল মেসির নেওয়া শট প্রথমে পা দিয়ে ফেরান আরন এসকান্দেই। ফিরতি বলে ত্রিনকাওয়ের শটে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল পাঠান এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক।
২৩তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকার ফ্রি-কিক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক। ৩৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় গ্রানাদা। বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছে সামুয়েল উমতিতির ভুলে বল পেয়ে ছয় গজ বক্সে বাড়ান আলবের্তো সরো। পায়ের টোকায় সহজেই জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার কেনেদি।
প্রথমার্ধে ৬৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে ১১টি শট নেয় বার্সেলোনা, এর ৬টি ছিল লক্ষ্যে। এই সময়ে গ্রানাদার ৩ শটের একটি ছিল লক্ষ্যে, সেটিতেই মেলে সাফল্য। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বার্সেলোনাকে চমকে দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সলদাদো। নিজেদের ডি-বক্সের একটু সামনে থেকে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
৬১তম মিনিটে মেসির শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান এসকান্দেই। পরক্ষণে ত্রিনকাওয়ের শট ক্রসবার কাঁপিয়ে ফেরে। ৮২তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের সামনে থেকে গ্রিজমানের ওভারহেড কিকে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক। অবশেষে ৮৮তম মিনিটে গ্রিজমানই কমান ব্যবধান। মেসির ক্রসে কাছ থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ডের শট পোস্টে লেগে গোলরক্ষকের পা ছুঁয়ে জালে জড়ায়।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে মেসির শট লাগে পোস্টে। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে সমতা ফেরে ম্যাচে। এই গোলেও অবদান ছিল মেসির। তার ক্রসে গ্রিজমানের হেড পাসে হেডেই বল জালে পাঠান আলবা। পরক্ষণে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েও বাইরে দিয়ে মারেন গ্রানাদার বদলি ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেস।
১০০তম মিনিটে বার্সাকে এগিয়ে নেন গ্রিজমান। বাঁ দিক থেকে আলবার ক্রসে লাফিয়ে হেডে গোলটি করেন তিনি।
দুই মিনিট পর গ্রানাদার কার্লোস নেভাকে সের্জিনো দেস্ত ডি-বক্সে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ঠাণ্ডা মাথার স্পট কিকে সমতা টানেন ভিকো।
১০৮তম মিনিটে বার্সেলোনাকে আবার এগিয়ে নেন ডি ইয়ং। মেসির নিচু শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর কাছ থেকে বল জালে পাঠান তিনি। আর ১১৩তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে জয় নিশ্চিত করেন আলবা।