বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ শুরু অস্ট্রেলিয়ার

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ডানহাতি ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংসের সেঞ্চুরির পরও সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৯ রানে হারতে হলো। বিলিংস ১১০ বলে ১১৮ রান করেন। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। একই সাথে জয় দিয়ে তারা বিশ্বকাপ সুপার লিগ শুরু করল।

ম্যানচেষ্টারে খেলতে নামার আগে বড় ধরনের ধাক্কাই খায় অস্ট্রেলিয়া। নেটে ব্যাটিংএর সময় মাথায় আঘাত পাওয়ায় প্রথম ম্যাচে একাদশের বাইরে ছিলেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ। তার পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হয় মানার্স লাবুশেনের। টস হেরে ব্যাট হাতে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি।

দলীয় ১৩ রানেই অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে বোল্ড করেন ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চার। ৬ রান করেন ওয়ার্নার। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। এক পর্যায়ে ১২৩ রান তুলতেই পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ১৬, মার্কাস স্টোয়নিস ৩৪ বলে ৪৩, লাবুশেন ২১ ও উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি ১০ রান করে ফিরেন।

২৪তম ওভারের মধ্যে উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন মিচেল মার্শ-গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ইংল্যান্ডের বোলারদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে শুরু করেন তারা। ১১৯ বলে ১২৬ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় স্কোর এনে দেয়ার পথ তৈরি করে ফেলেন মার্শ-ম্যাক্সওয়েল। দুজনই হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। ম্যাক্সওয়েল ২০তম ও মার্শ ১২তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।

মারমুখী মেজাজে থাকা ম্যাক্সওয়েলকে বিদায় দিয়ে জুটি ভাঙ্গেন আর্চার। সাত নম্বরে নামা ম্যাক্সওয়েল ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫৯ বলে নিজের ৭৭ রানের ইনিংসটি সাজান। ১০০ বলে ৬টি চারে ৭৩ রান করে আউট হন মার্শ। শেষদিকে, মিচেল স্টার্কের ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রানে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের আর্চার-উড ৩টি করে উইকেট নেন।

২৯৫ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ৫৭ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড-স্পিনার এডাম জাম্পা ২টি করে উইকেট শিকার করেন। জেসন রয় ৩, জো রুট ১, অধিনায়ক ইয়োইন মরগান ২৩ ও জশ বাটলার ১ রান করে ফিরেন। শুরুর ধাক্কাটা সামলে উঠেন আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও ছয় নম্বরে নামা বিলিংস। সর্তকতার সাথে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মোকাবেলা করে উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেন তারা। সফলতার মুখ দেখেন বেয়ারস্টো ও বিলিংস। ১১৬ বলে ১১৩ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ে ফেরান তারা।

৩৬তম ওভারে দলীয় ১৭০ রানে বেয়ারস্টোকে থামিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার এডাম জাম্পা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি করা বেয়ারস্টো ৮৪ রানে থামেন। তার ইনিংসে ৪টি করে চার-ছক্কা ছিল। বেয়ারস্টো যখন ফিরেন তখন ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৮৮ বলে ১২৫ রান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মঈন আলীও ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তাই ম্যাচ জয়ের আশা ছেড়েই দেয় ইংল্যান্ড।

কিন্তু টেল-এন্ডারদের নিয়ে লড়াই শুরু করেন উইকেটে সেট হয়ে থাকা বিলিংস। এক প্রান্ত রান তুললেও অন্যপ্রান্তে রান তোলার গতি ছিল একদমই ধীর। ফলে শেষ ২ ওভারে ৪৩ রান দরকার পড়ে ইংলিশদের। তখন ৯৮ রানে দাঁড়িয়ে বিলিংস। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে ১৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ দেন তিনি।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়া বিলিংস সেঞ্চুরি করেও ইংল্যান্ডের হার এড়াতে পারেননি। ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১০ বলে ১১৮ রান করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার জাম্পা ৪টি এবং ১০ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেয়ায় ম্যাচ সেরা হন হ্যাজেলউড। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

Scroll to Top