বছরের পর বছর একটা পুরস্কার জুভেন্টাসের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। কিন্তু টানা নয় বছর লিগ জিতেছে তারা। সেই যে ১৯৯৬ সালে মার্সেলো লিপ্পির কোচিংয়ে আলেসসান্দ্রো দেল পিয়েরো, আন্তোনিও কন্তে, দিদিয়ের দেশম, জিয়ানলুকা ভিয়ালি কিংবা অ্যাঞ্জেলো পেরুজ্জিরা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছিলেন, এরপর প্রতি আসরে খালিহাতে ফিরতে হয়েছে তুরিনের বুড়িদের। সে খরা কাটাতেই রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আনা হয়েছিল প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় – ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে।
কিন্তু রোনালদো আসার পর দুই মৌসুম কেটে গেলেও অধরা চ্যাম্পিয়নস লিগের স্পর্শ পায়নি জুভেন্টাস। গত বছর বাদ পড়েছিল ডাচ ক্লাব আয়াক্সের কাছে হেরে (যে ক্লাবকে হারিয়েই তাঁরা সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল)। এবার পা কেটেছে লিওঁ নামের পচা শামুকে। লিগ জয়ের আনন্দ তাই অনেকাংশেই স্তিমিত হয়ে গেছে জুভেন্টাস শিবিরে। গত কাল ছাঁটাই হয়েছেন কোচ মরিজিও সারি। নাটকীয় এক দিনের শেষে জুভেন্টাসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাবেক লিগ ও বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার আন্দ্রেয়া পিরলোকে।
দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও বোঝেন, শুধু লিগ জেতার জন্য তাঁকে আনা হয়নি। জুভেন্টাসের মতো বড় ক্লাবের শুধু লিগ জিতে সন্তুষ্ট থাকা মানায়ও না। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়েও তাই নতুন উদ্যমে দৃষ্টি রাখছেন ভবিষ্যতের দিকে, ‘২০১৯-২০ মৌসুম শেষ হয়ে গেছে আমাদের জন্য।
সাধারণত যে সময়ে শেষ হয় তার অনেক পরেই শেষ হয়েছে, তবুও আমরা যত দিন চেয়েছিলাম তার বেশ আগে শেষ হয়েছে। এখন ফিরে দেখার সময়। চিন্তা করে বের করতে এ মৌসুমে আমাদের সাফল্য কোথায় ছিল, কোন কোন জায়গায় আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কারণ উন্নতি করার জন্য চিন্তা করার কোনো বিকল্প নেই। জুভেন্টাসের মতো বড় ক্লাবের সব সময় উচিত যে তাঁরা বিশ্বের সেরা। তাঁদের কাজ করা উচিত বিশ্বের সেরা ক্লাবের মতো। যাতে আমরা আমাদের বিশ্বের অন্যতম সেরা ও বড় ক্লাব হিসেবে দাবি করতে পারি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে ভক্তদের বাড়তি প্রত্যাশা মেটানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এই তারকা, ‘এমন কঠিন একটা বছরেও সিরি ‘আ’ জেতাটা অত্যন্ত কঠিন। এটা এমন একটা জিনিস যা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে জুভেন্টাসের হয়ে ৩৭ আর পর্তুগালের হয়ে ১১ গোল করাটা আমাকে সাহস দেয় বাড়তি উদ্যমে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর, প্রতি বছরে আরও ভালো করার।
কিন্তু ভক্তরা আমাদের কাছ থেকে আরও চায়। তাঁরা আমাদের কাছ থেকে আরও ভালো কিছু প্রত্যাশা করে। আর আমাদের অবশ্যই তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। বাড়তি প্রত্যাশা যাতে পূরণ হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। আশা করব, এই অল্প ছুটি আমাদের ভবিষ্যতের কথা নতুন করে ভাবার অনুপ্রেরণা দেবে। আরও শক্তিশালী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ফিরে আসার প্রেরণা দেবে। দেখা হচ্ছে শিগগিরই!’