যেভাবে গলি থেকে রাজপথে উত্তরণ ২ পাকিস্তানি বোলারের

উপরে উঠার জন্য ভাগ্য এবং দক্ষতা দুইটাই প্রয়োজন হয়। কাজ করতেন চামড়ার কারখানায়। ওয়েল্ডিং করতেন। পেট চালানোর জন্য। গ্লেন ম্যাকগ্রাথ, মোহম্মদ আসিফের ভক্ত। ক্রিকেট খেলতে যেয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি বলে সংসার চালানোর জন্য অন্য কাজে মন দিয়েছিলেন। বন্ধুরা উৎসাহ দিয়ে গেছেন। ক্রিকেটে ফিরলে দেশের জার্সি গায়ে দেওয়ার সুযোগ আসতেই পারে। তাই চামড়ার কারখানার কাজের পাশাপাশি বোলিং করে যেতেন। বন্ধুদের কথা শুনে ফেরেন আবার ক্রিকেটে।

পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে কায়েদ-এ-আজম টুর্নামেন্টে ২০১৫-১৬ মরশুমে ১০ ম্যাচে ৬১টি উইকেট নিয়ে চমক দেখান। তারপরের মৌশুমে আবার নেন ৭১ উইকেট। নির্বাচকদের নজর কাড়েন। তারপর ২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় মোহম্মদ আব্বাসের।

ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই নজর কাড়লেন। শিয়ালকোটের কাছে ছোট্ট গ্রামের আব্বাস ফর্মে থাকা বেন স্টোকসকে যে ডেলিভারিতে আউট করেছেন তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।

ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার শখ। বোলার হবে। মহল্লার গলি ক্রিকেটে ছোটবেলা থেকে সুনাম অর্জন করেছিল পেস বোলিংয়ের জন্য। কিন্তু বাবা চেয়েছিলেন ছোট ছেলে অন্য কিছু করুক। কারণ বাবা মনে করতেন ক্রিকেট হল ব্রিটিশদের স্থানীয় খেলা। ওই খেলা খেলতে হবে না। কিন্তু বাবার সামনে এগিয়ে আসেন বড় ছেলে। তিনি তাকে বোঝান, ভাইয়ের ক্রিকেটে ভবিষ্যৎ রয়েছে। বাবা বোঝেন।

সেই ছেলে এখন পাকিস্তানের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার। ১৭ বছরের নাসিম শাহ। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকেই চমক দিয়েছেন। নাসিম শাহ সম্পর্কে আরও একটি তথ্য। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ খেলার মাঝেই অসুস্থ মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েও দেশে ফেরেননি। যে বাবা এক সময়ে ক্রিকেট খেলতে দেননি তারই নির্দেশে দেশের হয়ে কর্তব্য পালনে থেকে যান অস্ট্রেলিয়ায়! ‌

Scroll to Top