‘বিষাক্ত সাপে কামড় দিলে তার চিকিৎসা আছে। কিন্তু ভুল ধারণার কোনো চিকিৎসা নেই’—শহীদ আফ্রিদিকে উদ্দেশ্য করেই কথাটা বলেছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার আকাশ চোপড়া। করোনা থেকে সেরে উঠেই আফ্রিদি ভারতকে যে খোঁচাটা দিয়েছেন চোপড়ার মন্তব্যটা তারই জবাবে।
আফ্রিদি সম্প্রতি ইউটিউবের এক ক্রিকেট শো-তে বলেছেন, তাঁর সময়ে পাকিস্তান ভারতকে এমনভাবে হারাত যে, ভারতের খেলোয়াড়েরা নাকি ম্যাচের পর পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের বলত, ‘ভাই, মাফ করে দাও।’
চোপড়া নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আফ্রিদির এই মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন নানা পরিসংখ্যান আর যুক্তি ব্যবহার করে, ‘একটা সময় পাকিস্তান দল খুবই ভালো ছিল। এখনো পাকিস্তান যথেষ্ট ভালো দল। একটা সময় ভারত যখন শারজায় পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলত, তখন ম্যাচের ফল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দিকেই ঝুঁকে থাকত। কিন্তু ওই সময়টা কিন্তু “আফ্রিদির সময়” নয়।’
আফ্রিদি যখন পাকিস্তান দলের অংশ, সে সময়টায় ব্যাপারটা এমন ছিল না বলে মনে করেন চোপড়া, ‘পাকিস্তানের শক্তি ছিল ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম কিংবা ওয়াকার ইউনিসের মতো প্রতিভারা। কোনো সন্দেহ নেই, তাঁদের সময় পাকিস্তান নিয়মিতই ভারতকে হারাত। কিন্তু আফ্রিদির খেলা শুরু করার সময় থেকে তার অবসরের সময় পর্যন্ত দৃশ্যপটটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল।’
আফ্রিদি যে সময় খেলেছেন সে সময় ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন চোপড়া, ‘সে সময়ের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখবেন, এই দুই দল ১৫টি টেস্ট খেলেছে। দুই দলই জিতেছে ৫টি করে টেস্ট। ওয়ানডেতে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে মাত্র দুটি ম্যাচ বেশি জিতেছে। ৮২ ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছে ৪১টি, ভারত ৩৯টি। কিন্তু আমি মনে করি না যে ভারতের কোনো খেলোয়াড় কেবল দুটি ম্যাচ কম জেতার কারণে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের কাছে গিয়ে মাফ চেয়েছে।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারত অনেকটাই এগিয়ে আছে—এমন পরিসংখ্যানই তুলে ধরেছেন চোপড়া। সেই সঙ্গে তাঁর রসাত্মক মন্তব্য, ‘টি-টোয়েন্টি সংস্করণের কথা যদি বলেন, তাহলে ভারত সত্যিই দুর্দান্ত। পাকিস্তানের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারত এগিয়ে ৭-১ ব্যবধানে। আফ্রিদির গল্পটা পুরোনো দিনের। খুব সম্ভবত সে যা বলতে চেয়েছিল সেটা বলতে পারেনি।’
তারপর চোপড়া আফ্রিদিকে আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতের দাপট এখন অন্যরকম। ভারত যখন অস্ট্রেলিয়া সফর করে, তখন অস্ট্রেলিয়াকে হারায়। পাকিস্তান যখন অস্ট্রেলিয়া সফর করে, তখন হেরে আসে। এই দুই দলের মধ্যে এখন অনেক ব্যবধান।’ আফ্রিদি বা পাকিস্তানের অন্য কোনো খেলোয়াড়ের কাছ থেকে কী জবাব আসে, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।